রেজাউল হাসান কয়েস লোদী: একজন অনুগত রাজনীতিকের উত্থান
রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চারবারের কাউন্সিলর, সিলেটের রাজনীতিতে একজন পরিচিত নাম। হাউজিং এস্টেটের মতো অভিজাত এলাকার দীর্ঘদিনের জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির জন্য পরিচিত। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কর্মী হিসেবে কয়েস লোদীর রাজনৈতিক জীবনে বেশ কঠিন সময়ও কাটাতে হয়েছে। বিএনপির রাজনীতির জন্য তাকে কয়েকবার কারাগারে থাকতে হয়েছে এবং বিদেশ ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
২০২৩ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলের নির্দেশনা মেনে তিনি প্রার্থী হননি। সরকার পতনের আন্দোলনে তার অবদান উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘদিনের ত্যাগ ও সংগ্রামের পর অবশেষে তিনি সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন।
৪ নভেম্বর ২০২৩ সালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই নিয়োগের কথা জানানো হয়। সর্বশেষ তিনি সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন এবং এর আগে সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।
বিএনপির হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ত্যাগী, পরীক্ষিত ও নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয় না। বিশেষ করে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চার মেয়াদে আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণ, দলের প্রতি আনুগত্য, এবং সরকার পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য কয়েস লোদীকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০২৩ সালের সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সরকার তাকে প্রার্থী হতে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেছিল। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। ১৮ মে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন যে, আওয়ামী লীগ ও তাদের নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
দায়িত্ব গ্রহণের পর, কয়েস লোদী সিলেটভিউকে জানিয়েছেন যে, তিনি দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞ এবং দায়িত্ব পালনে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করার কথাও উল্লেখ করেছেন।
কয়েস লোদীর রাজনৈতিক পথচলা শুরু হয় ১৯৯১ সালে ছাত্রদল থেকে। পরবর্তীতে তিনি জেলা ছাত্রদল, জাতীয়তাবাদী আইন ছাত্র ফোরাম, তরুণদল, এবং সিলেট জেলা ছাত্রদলের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালে তিনি মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, ২০১১ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক, ২০১৩ সালে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ২০১৬ সালে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। কাউন্সিলর থাকাকালীন তিনি সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়রের দায়িত্বও পালন করেছেন।