কার্বন মনোক্সাইড (CO) একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন, স্বাদহীন এবং বাতাসের চেয়ে কিছুটা হালকা গ্যাস। এটি মানুষসহ সকল হিমোগ্লোবিনযুক্ত প্রাণীর জন্য অত্যন্ত বিষাক্ত। একটি কার্বন পরমাণু এবং একটি অক্সিজেন পরমাণু ত্রিগুণ বন্ধনে যুক্ত হয়ে কার্বন মনোক্সাইড অণু গঠন করে। আন্তর্জাতিকভাবে এটিকে বিষাক্ত গ্যাস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
কার্বনযুক্ত পদার্থ যেমন কাঠ, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদির অসম্পূর্ণ দহন (অর্থাৎ, অক্সিজেনের অভাবে পোড়া) এর ফলে কার্বন মনোক্সাইড উৎপন্ন হয়। কার্বন মনোক্সাইডের কোন গন্ধ না থাকায় মানুষের পক্ষে এটি শনাক্ত করা কঠিন এবং এর প্রভাব অনুভব করার আগেই বিপদগ্রস্ত হতে পারে। অত্যধিক পরিমাণে শ্বাসের সাথে কার্বন মনোক্সাইড গ্রহণে দ্রুত অজ্ঞান হওয়া এবং মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। পাশ্চাত্য দেশসমূহে এটি আত্মহত্যার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম।
কার্বন মনোক্সাইড রক্তের হিমোগ্লোবিনের সাথে যুক্ত হয়ে কার্বোক্সিহিমোগ্লোবিন (HbCO) গঠন করে। এই যৌগ গঠনের ফলে হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন বহন করতে অক্ষম হয়, যার ফলে শ্বাসকষ্ট, টিস্যু ক্ষতি এবং হৃদরোগের মতো সমস্যা দেখা দেয়। এই কারণেই কার্বন মনোক্সাইডকে 'নীরব ঘাতক' বলা হয়।
কার্বন মনোক্সাইডের ব্যবহার আইনত দন্ডনীয়। গবেষণাগারে ব্যবহারের সময় দস্তানা, নিরাপত্তা চশমা এবং গ্যাস মাস্ক ব্যবহার অপরিহার্য। ঘরবাড়িতে কার্বন মনোক্সাইড সনাক্তকরণের জন্য কার্বন মনোক্সাইড ডিটেক্টর ব্যবহার করা উচিত। কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি।