বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই শিক্ষাব্যবস্থা দেশের দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই লেখায় বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার বর্তমান অবস্থা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাক্রম এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করা হবে।
কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানসমূহ:
বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম বিভিন্ন ধরণের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর: ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ এই অধিদপ্তর কারিগরি শিক্ষার সার্বিক নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নের দায়িত্ব পালন করে।
- বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (বাকাশিবো): ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত, বোর্ড কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ, পরীক্ষা পরিচালনা এবং সনদ প্রদান করে।
- পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট: এগুলো ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সহ বিভিন্ন কারিগরি ডিপ্লোমা কোর্স পরিচালনা করে।
- টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ: এগুলো এসএসসি (ভোকেশনাল) ও এইচএসসি (ভোকেশনাল) কোর্স পরিচালনা করে।
- কারিগরি শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান: এই প্রতিষ্ঠানগুলি কারিগরি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে।
শিক্ষাক্রম:
কারিগরি শিক্ষা বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে প্রদান করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
- এসএসসি (পেশাগত): দুই বছর মেয়াদী এই কোর্স বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণিতে অনুষ্ঠিত হয়।
- এইচএসসি (পেশাগত): দুই বছর মেয়াদী এই কোর্স বিদ্যালয়ের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে অনুষ্ঠিত হয়।
- এইচএসসি (বি.এম): এই কোর্স ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত শিক্ষা প্রদান করে।
- ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং: চার বছর মেয়াদী এই কোর্স পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পরিচালিত হয়।
- অন্যান্য ডিপ্লোমা কোর্স: কৃষি, মৎস্য, চামড়া শিল্প, সুতি বস্ত্রশিল্প ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা কোর্স উপলব্ধ।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
বাংলাদেশ সরকার কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- নতুন কারিগরি প্রতিষ্ঠান স্থাপন।
- শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের উন্নয়ন।
- শিক্ষাক্রমের যুগোপযোগীকরণ।
- কারিগরি শিক্ষার সাথে শিল্পের সমন্বয়।
- জাতীয় দক্ষতা মান (National Skills Standard) প্রয়োগ।
উপসংহার:
বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনে সরকারের চলমান উদ্যোগ শ্রেয়স্কর।