আয়ারল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত প্রাচীন শহর ওয়াটারফোর্ড, প্রায় এক হাজার বছরের ইতিহাস ধারণ করে। একসময় ভাইকিংদের বসতি ‘ভাদ্ররফজর্ড’ (শীতকালীন বন্দর) নামে পরিচিত ছিল। ১২শ শতকে অ্যাংলো-নরম্যানদের আক্রমণ এবং ডাবলিনের আধিপত্যের ফলে এর খ্যাতি কিছুটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালে নিউইয়র্ক টাইমস ওয়াটারফোর্ডকে ২০২৪ সালের ভ্রমণের জন্য সেরা ৫২টি স্থানের একটি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে, শহরটি আবারো আলোচনায় এসেছে।
ওয়াটারফোর্ড ক্রিস্টালের ২০০৯ সালে বন্ধ হওয়ার পরে শহরের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, ওয়াটারফোর্ড নিজস্ব ঐতিহ্যকে কাজে লাগিয়ে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ‘ভাইকিং ট্রায়াংগেল’ নামে ঐতিহাসিক জাদুঘর এলাকা, ১৩শ শতাব্দীর রেজিনাল্ডস টাওয়ার, সিলভার জাদুঘর এবং সময় জাদুঘর পর্যটকদের আকর্ষণ করে। ‘নাইট অব দ্য ভাইকিংস’ ভিআর অভিজ্ঞতা ভাইকিং যুগের রোমাঞ্চকর জগতে নিয়ে যায়। প্রথম আয়ারল্যান্ডের ত্রিবর্ণ পতাকা উত্তোলনকারী ও আমেরিকান সিভিল ওয়ারে অংশগ্রহণকারী টমাস ফ্রান্সিস মেঘেরের সাথে ওয়াটারফোর্ডের যোগাযোগও উল্লেখযোগ্য।
শুধু ইতিহাস নয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও ওয়াটারফোর্ড বিখ্যাত। মাউন্ট কংগ্রিভ গার্ডেন (বিশ্বের বৃহত্তম উদ্ভিদ সংগ্রহের স্থান), ২০২৩ সালে সংস্কারের পর আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ইউনেস্কো ঘোষিত কপার কোস্ট গ্লোবাল জিওপার্ক, প্রাকৃতিক গুহা, সমুদ্র সৈকত ও প্রাচীন খনিগুলি দিয়ে পর্যটকদের আকর্ষণ করে। ওয়াটারফোর্ডের বোদেগা রেস্টুরেন্টের ঐতিহ্যবাহী খাবার ও তাজা সীফুডও এর আকর্ষণ। এই সমস্ত আকর্ষণ ওয়াটারফোর্ডকে আয়ারল্যান্ডের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।