বাংলাদেশে ওষুধের দাম বৃদ্ধি ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ আইন নিয়ে সম্প্রতি ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিগত তিন মাসে কিছু ওষুধের দাম ১১০% পর্যন্ত বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওষুধ কোম্পানিগুলো দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ডলার সংকট ও কাঁচামাল আমদানির সমস্যা দেখাচ্ছে। তবে, সমালোচকদের দাবি, আওয়ামী লীগের শেষ আমলে সালমান এফ রহমানের কোম্পানি বেক্সিমকোর চাপে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ আইন পরিবর্তন করা হয়েছে। পরিবর্তিত আইনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ১১৭টি জেনেরিক ওষুধের দাম সরকারের হাতে থাকলেও, বাকি ওষুধের দাম কোম্পানি নির্ধারণ করে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অভিযোগ, কোম্পানিগুলো আগে দাম বাড়িয়ে পরে অনুমোদনের জন্য আবেদন করে। দেশে ওষুধের বাজার ৩৫,০০০ কোটি টাকার এবং ৪,১৮০ জেনেরিকের ৩৫,২৯০টি ব্র্যান্ডের ওষুধ উৎপাদিত হয়। আন্তর্জাতিক ওষুধ কোম্পানির তুলনায় বাংলাদেশে অনেক ওষুধের দাম বেশি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের উচিত ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এবং এসেনশিয়াল মেডিসিনের তালিকা সম্প্রসারণ করা। এছাড়াও, সর্বজনীন স্বাস্থ্য বীমা চালু করা গুরুত্বপূর্ণ। ওষুধের দাম নির্ধারণে কাঁচামালের আমদানি খরচ, উৎপাদন ও প্যাকেজিং খরচ, বিতরণ ও বিপণন খরচ এবং মুনাফা বিবেচনা করা হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী এক দশকে বিভিন্ন জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম ১০% থেকে ১৪০% পর্যন্ত বেড়েছে। ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদন ও বিপণন খরচের ৩০-৫০% চিকিৎসকদের পেছনে ব্যয় করে, যা দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করে ব্যয় কমিয়ে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। একজন রোগীর চিকিৎসার ব্যয়ের প্রায় ৬৫% ওষুধের পেছনে ব্যয় হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওষুধের দাম নির্ধারণের পদ্ধতি ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্রে কোম্পানি নির্ধারণ করে, ইউরোপে সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ আছে। ভারতে National Pharmaceutical Pricing Authority (NPPA) ৮০০ টিরও বেশি এসেনশিয়াল মেডিসিনের দাম নির্ধারণ করে। পাকিস্তানেও মুদ্রাস্ফীতি ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে ওষুধের দাম বেড়েছে।
Loading...
© ২০২৪ অটোমাইন্ড আইটি, সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত.