ওষুধ কারখানা

আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ পিএম

বাংলাদেশের ঔষধ শিল্প: একটি বিশ্লেষণ

বাংলাদেশে ঔষুধ শিল্প একটি উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক খাত, যা দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও নিজের অবস্থান তৈরি করেছে। বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরীণ ঔষধ বাজারের মূল্য প্রায় ১৩,০০০ কোটি টাকারও বেশি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ৬৫০ কোটি টাকারও বেশি রপ্তানি হচ্ছে। এই খাতে বার্ষিক প্রায় ৯% প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ওষুধ কারখানা সম্পর্কে:

বাংলাদেশে বর্তমানে ৮৫০ টিরও বেশি ছোট-বড় ওষুধ কারখানা ও ২৬৯টি এলোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকগুলোই দেশীয় এবং কিছু আন্তর্জাতিক কোম্পানির শাখা। এসব প্রতিষ্ঠান মিলে দেশের ওষুধের চাহিদার ৯৮% পূরণ করছে এবং ১৬০ টিরও বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে। প্রায় ২৫,০০০ কোটি টাকার ওষুধ ও কাঁচামাল দেশে উৎপাদিত হচ্ছে এবং এই শিল্পে প্রায় দুই লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

ইতিহাস:

বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পের যাত্রা শুরু হয় ৫০ এর দশকের গোড়ার দিকে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর ওষুধ উৎপাদন শুরু হলেও, তখন এ শিল্প এতটা উন্নত ছিল না। প্রথম দিকে দেশের মোট চাহিদার ২০% উৎপাদন করতে পারত, বাকিটা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হত। স্বাধীনতার পর, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ওষুধ বিক্রি করতে অনীহা প্রকাশ করলে পূর্ব ইউরোপের কিছু সংস্থা পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে ওষুধ সরবরাহে রাজি হয়। ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দেশের প্রায় ৭০ ভাগ বাজার আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর একচেটিয়া দখলে ছিল। ১৯৮২ সালে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ জারি হওয়ার পর দেশীয় ওষুধ শিল্প মুক্তি পায় এবং বাজার সম্প্রসারণ শুরু করে।

বর্তমান অবস্থা ও সমস্যা:

বর্তমানে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের উন্নয়ন অব্যাহত থাকলেও, কিছু সমস্যাও বিদ্যমান। এদের মধ্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ সরবরাহ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, গবেষণা ও উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তির অভাব, মান নিয়ন্ত্রণ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং অবৈধ ওষুধের ব্যবসা উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি ওষুধ কারখানাগুলোতে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনাও দেখা দিয়েছে, যা উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।

ভবিষ্যৎ:

বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। দেশীয় এপিআই (Active Pharmaceutical Ingredients) উৎপাদন বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রণের আরও উন্নয়ন, গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং সরকারের সহায়তার মাধ্যমে এই খাতকে আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।

মূল তথ্যাবলী:

  • বাংলাদেশের ঔষধ বাজার ১৩,০০০ কোটি টাকার উপরে।
  • ৮৫০ টিরও বেশি ওষুধ কারখানা ও ২৬৯ টি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
  • দেশের চাহিদার ৯৮% পূরণ করে ১৬০+ দেশে রপ্তানি হয়।
  • প্রায় দুই লক্ষ মানুষ কর্মসংস্থান পেয়েছে।
  • ১৯৮২ সালে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ জারি।
  • গ্যাস, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, গবেষণা, দক্ষ জনশক্তি, মান নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - ওষুধ কারখানা

২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

ওষুধ কারখানায় রাসায়নিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

ওষুধ কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় ৪ জন দগ্ধ হয়েছেন।