ওড়িশা ভারতের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত একটি রাজ্য, যা ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এর আগে উড়িষ্যা নামে পরিচিত ছিল, কিন্তু ২০১১ সালে নাম পরিবর্তন করা হয়। ওড়িয়া ভাষা রাজ্যের সরকারী ভাষা। উত্তরে ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমে ছত্তিশগড় রয়েছে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব: ওড়িশার ইতিহাস প্রাচীন কাল থেকেই সমৃদ্ধ। খ্রিস্টপূর্ব ২৬১ সালে মৌর্য সম্রাট অশোকের কলিঙ্গ যুদ্ধের পর, অশোক ধর্ম পরিবর্তন করেন বলে ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে। পরবর্তীকালে কলিঙ্গ রাজ্য গড়ে ওঠে, যা বিভিন্ন রাজবংশের শাসন দেখেছে। পঞ্চদশ শতাব্দীতে সরলা দাস মহাভারতের ওড়িয়া অনুবাদ করেন। গজপতি রাজাদের আমলে (১৪৩৫-১৪৬৭) ওড়িশার নাম ‘ওড়িশা রাজ্য’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান: ওড়িশার ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। সমুদ্রসৈকত, পাহাড়, নদী এবং বনাঞ্চল এখানে রয়েছে। মহানদী, ব্রহ্মণী, বৈতরণী, সুবর্ণরেখা, রুশিকুল্যা, বুঢ়াবলংগা- এই নদীগুলি রাজ্যের জীবনধারা এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উত্তর ও পশ্চিমে পূর্ব ঘাট পর্বতমালা বিস্তৃত।
অর্থনীতি: কৃষি ওড়িশার অর্থনীতির মূল ভিত্তি। ধান, পাট, তৈলবীজ উৎপাদনে রাজ্যটি অগ্রণী। খনিজ সম্পদের দিক থেকেও রাজ্যটি সমৃদ্ধ। কয়লা, লোহা, বক্সাইট, ক্রোমাইট প্রভৃতি খনিজ উত্তোলনে ওড়িশা ভারতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। রৌরকেলা ইস্পাত কারখানা ভারতের প্রথম সরকারি সংহত ইস্পাত কারখানা।
পর্যটন: ওড়িশার পর্যটন ক্ষেত্র উল্লেখযোগ্য। পুরীর জগন্নাথ মন্দির, কোণার্ক সূর্য মন্দির, লিঙ্গরাজ মন্দির, চিলিকা হ্রদ, ভিতরকণিকা জাতীয় উদ্যান, সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান প্রভৃতি পর্যটন আকর্ষণ। ওড়িশি নৃত্য ও সংগীত বিশ্ববিখ্যাত। সুদর্শন পট্টনায়কের মতো বিখ্যাত বালুশিল্পী রয়েছেন।
জনসংখ্যা: ওড়িশার জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ১০ লক্ষের বেশি, জনসংখ্যা ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে কম। গ্রামীণ জনসংখ্যা বেশি।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি: সরলা দাস, সুদর্শন পট্টনায়ক প্রমুখ।
উল্লেখযোগ্য স্থান: পুরী, কোণার্ক, ভুবনেশ্বর, চিলিকা হ্রদ, ভিতরকণিকা, সিমলিপাল, রৌরকেলা, সম্বলপুর প্রভৃতি।
সংগঠন: ওড়িশা পর্যটন দফতর, রৌরকেলা ইস্পাত কারখানা প্রভৃতি।
আমাদের কাছে আরও তথ্য থাকলে, আমরা এই নিবন্ধটি সম্পূর্ণ করব।