গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে (আইইউটি) পিকনিক বাস দুর্ঘটনার পর ওআইসি তদন্তের দুটি আলাদা দিক পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রথমত, তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আইইউটি কর্তৃপক্ষ প্রথমে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও শিক্ষার্থীরা সেই তদন্তে অবিশ্বাস প্রকাশ করে। পরবর্তীতে ওআইসি চার সদস্যের একটি তদন্ত দল পাঠায়। নিহত শিক্ষার্থীরা হলেন মোস্তাকিম রহমান মাহিন, মোজাম্মেল হোসেন ও জুবায়ের রহমান সাকিব। দ্বিতীয়ত, শিক্ষার্থীদের দাবি ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগ। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই ওআইসি তদন্তে এগিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা প্রথমে ৫ জন, পরে ১২ জন শিক্ষক-কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবি করে। এই অভিযোগের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ড. এনায়েততুল্লাহ পাটোয়ারীর নামও ছিল। ড. পাটোয়ারী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অফিসের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জাওয়াদ জহির জানিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রদের হয়রানি, ক্ষমতার অপব্যবহার, একাডেমিক চৌর্যবৃত্তি, দায়িত্বে অবহেলা, শারীরিক নির্যাতন ও আর্থিক অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। মৃত্যুর ঘটনা থেকে দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আনার ব্যাখ্যায় তিনি বিবৃতি পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী কিছু শিক্ষক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা অভিযোগ করেছেন, কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে তাদের অপমান ও মানহানির চেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার কমিটির ব্যর্থতার কথাও উঠে এসেছে। এই কমিটির দীর্ঘদিন ধরে ডিরেক্টর ছিলেন ড. পাটোয়ারী।
উল্লেখ্য, ২৩ নভেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে বিআরটিসির একটি দ্বিতল বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। ঘটনার পর ওআইসি তদন্তের দুটি দিকই এখন গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করা এবং দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি ও হয়রানির অভিযোগের তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ।