এম ইলিয়াস আলী: একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদের রহস্যময় নিখোঁজের গল্প
১৯৬১ সালের ১লা জানুয়ারি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামধনায় জন্মগ্রহণ করেন এম ইলিয়াস আলী। তিনি ছিলেন একজন সফল রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য ছিলেন।
ইলিয়াস আলীর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৮০ সালে বিএনপির ছাত্র সংগঠন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাথে যুক্ত হয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় তিনি বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। ১৯৮৭ সালে সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার তাহসিনা রুশদীকে বিয়ে করেছেন এবং তাদের দুই পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ২০১০ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি হরতাল, বিক্ষোভ, প্রতিরোধ কর্মসূচী এবং দলগঠন সহ বিভিন্ন কার্যক্রমে সমন্বয় সাধন করতেন।
কিন্তু ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকার বনানী এলাকা থেকে তিনি এবং তার গাড়িচালক আনসার আলী রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। বিএনপি অভিযোগ করে, সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের অপহরণ করেছে। সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারপর থেকেই তার খোঁজ মেলেনি। ইলিয়াস আলীর নিখোঁজের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং তার সন্ধানে বহু আন্দোলন ও প্রতিবাদ হয়েছে। ইলিয়াস আলীর নিখোঁজের ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে রহস্যের আবরণে আচ্ছাদিত ছিল, যার অনেক দিকই আজও অজানা। তবে, ২০২২ সালে সুইডেনভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজ একটি রিপোর্টে অভিযোগ করে যে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ইলিয়াস আলীকে অপহরণ করেছে। এই রিপোর্টে র্যাবের অভ্যন্তরীণ তথ্যের উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারীভাবে কোন তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ইলিয়াস আলীর পরিবার ও বিএনপি তার দ্রুত ফিরে আসার দাবী করে আসছে। এ বিষয়ে আরো তথ্য পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা এই প্রতিবেদন আপডেট করব।