এম. আবু বকর সিদ্দিক নামটি দুই ব্যক্তিকে নির্দেশ করতে পারে, তাই বিভ্রান্তি এড়াতে তাদের পৃথকভাবে বর্ণনা করা প্রয়োজন।
প্রথম ব্যক্তি:
মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী (জন্ম: ১৮৪৫, মৃত্যু: ১৯২৮) ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ফুরফুরা দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা পীর। তিনি ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকরের বংশধর বলে ধারণা করা হয়। তাঁর পিতার নাম আব্দুল মুক্তাদির সিদ্দিকী এবং মাতার নাম মুহব্বতুন নেসা বেগম। তিনি ফুরফুরায় জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই বহু মসজিদ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রায় ১১০০ মাদরাসা এবং ৭০০ মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ইসলামি শরীয়ত ও তরীকত প্রচারে, ওয়াজ-নসিহত, পত্র-পত্রিকা প্রকাশ ও শিক্ষা বিস্তারে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। তাকে ধর্মীয় অবদানের জন্য আমীরে শরিয়ত বলে অভিহিত করা হয় এবং চতুর্দশ হিজরীর মুজাদ্দিদ মনে করা হয়।
তার বাল্যশিক্ষা নিজ ঘরে শুরু হয়। পরে স্থানীয় প্রাইমারি স্কুল ও সিতাপুর মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। হুগলি সদর শহরের মুহসিনিয়া মাদ্রাসা থেকে তৎকালীন সর্বোচ্চ জামাতে উলা ক্লাসে প্রথম স্থান অর্জন করেন। কলকাতা শহরে জামালুদ্দিন শিক্ষা কেন্দ্রে হাদিস, তাফসির ও ফিকাহ শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন এবং ফিরিঙ্গি মহলের নজর শাহ বেলায়েতীর কাছে হিকমাহ শাস্ত্র, বালাগাত-মানতিক, দর্শন শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। মক্কা ও মদিনা শহরে গমন করেন এবং মদিনার মুহাদ্দিস সৈয়দ মোহাম্মদ আমিনের কাছ থেকে ৪০টি হাদিস গ্রন্থের সনদ লাভ করেন। আলিয়া মাদ্রাসায় হাদিসের দারস ও পাঠদানের ব্যবস্থা চালু করেন।
দ্বিতীয় ব্যক্তি:
এম. আবু বকর সিদ্দিক (জন্ম: ১৯ আগস্ট ১৯৩৪, মৃত্যু: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩) ছিলেন একজন বাংলাদেশী কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও সমালোচক। তিনি বাগেরহাটের গোটাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং বাগেরহাট মাধ্যমিক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি পিসি কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা লাভ করেন। চাখার ফজলুল হক কলেজ, বি এল কলেজ, পি.সি কলেজ, ফকিরহাট কলেজ ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন এবং দীর্ঘদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন। পরে ঢাকার নটর ডেম কলেজ এবং কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ১৯৮৮ সালে বাংলা একাডেমী পুরষ্কার লাভ করেন। তার মেয়ে বিদিশা এরশাদ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী। তিনি খুলনার সিটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।