বাংলাদেশের উচ্চ আদালত: বিচার ব্যবস্থার এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ
বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের দুটি বিভাগের মধ্যে হাইকোর্ট ডিভিশন, যা সাধারণত উচ্চ আদালত নামে পরিচিত, অন্যতম। আপীল বিভাগ হলো সুপ্রীম কোর্টের অপর বিভাগ। উচ্চ আদালত বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত।
উচ্চ আদালতের কার্যক্ষেত্র:
উচ্চ আদালত দেওয়ানী ও ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে আদি ও আপীল বিচারাধিকার প্রয়োগ করে। এর প্রধান কার্যক্ষেত্র হলো রিট বিচারাধিকার, যার অধীনে এটি বাংলাদেশের সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীনে সার্টোরারি, ম্যান্ডামাস, কো ওয়ারেন্টো, প্রোহিবিশন এবং হ্যাবিয়াস কর্পাস জারি করার ক্ষমতা রাখে।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান বিভক্তির পর পাকিস্তান (প্রাদেশিক সংবিধান) আদেশ ১৯৪৭ অনুযায়ী ঢাকায় ‘ঢাকা হাইকোর্ট’ নামে একটি আলাদা উচ্চ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটিতে আপীল, দেওয়ানী এবং আদি বিচারাধিকার ছিল। ১৯৫৫ সালে এটি পূর্ব পাকিস্তানের উচ্চ আদালতে পরিণত হয়। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, যার আপীল বিচারাধিকার ছিল।
১৯৬৭ সাল পর্যন্ত উচ্চ আদালত কাজি নজরুল ইসলাম এভিনিউতে, কারজন হলের বিপরীতে অবস্থিত ‘পুরাতন উচ্চ আদালত ভবনে’ অবস্থিত ছিল। ১৯৬০-এর দশকে কাছাকাছি নতুন একটি বৃহত্তর ভবন নির্মিত হলে, ১০ জুলাই ১৯৬৭ সালে উচ্চ আদালত সেখানে স্থানান্তরিত হয়। এই নতুন ভবন বর্তমানে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ধারণ করে।
১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশ হয়। ৯ জানুয়ারী ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট অব জুডিচেচার আইন পাস হয়, যার ফলে আগের ঢাকা হাইকোর্ট বাতিল করে উচ্চ আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়।
উচ্চ আদালতের এখতিয়ার:
বাংলাদেশের সংবিধানের ১০১ অনুচ্ছেদে উচ্চ আদালতের এখতিয়ার বর্ণিত আছে। উচ্চ আদালত আদি মামলা, আপীল এবং অন্যান্য বিচারিক কাজ পরিচালনা করে। সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীনে রিট আবেদন, কোম্পানি ও সেনা বিষয়ক মামলায় এটির সীমিত আদি এখতিয়ার আছে।
আপীল বিচারাধিকার:
যেকোনো আইন আপীল বিচারাধিকার দিতে পারে। যেমন, ফৌজদারি ও দেওয়ানী বিচারবিধি উচ্চ আদালতকে আপীল বিচারাধিকার দিয়েছে।