ইমদাদুল হক মিলন: একজন অসাধারণ কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার
ইমদাদুল হক মিলন (জন্ম: ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার। তিনি গল্প, উপন্যাস এবং নাটক- এই তিনটি ক্ষেত্রেই সমানভাবে সুনাম অর্জন করেছেন। শিশুতোষ গল্প লিখে ‘কিশোর বাংলা’ পত্রিকায় তার সাহিত্য জীবনের সূচনা। পরবর্তীতে ‘সাপ্তাহিক বিচিত্রা’য় ‘সজনী’ গল্প প্রকাশের মাধ্যমে পাঠকদের মন জয় করতে শুরু করেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে তিনি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘একুশে পদক’ লাভ করেন।
বিক্রমপুরের মেদিনীমণ্ডল গ্রামে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন মিলন। তার পৈতৃক নিবাস মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার পয়সা গ্রামে। ১৯৭২ সালে লৌহজং উপজেলার কাজীর পাগলা হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৭৪ সালে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৭৯ সালে একই কলেজ থেকে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন।
ইমদাদুল হক মিলন লেখক হিসেবে বাংলাদেশ এবং ভারতে সমান জনপ্রিয়। তার ‘নূরজাহান’ উপন্যাসটি দুই বাংলাতেই ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বর্তমানে তিনি দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাথে যুক্ত। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।
তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় দুই শত। ‘অধিবাস’, ‘পরাধীনতা’, ‘কালাকাল’, ‘বাঁকাজল’, ‘নিরন্নের কাল’, ‘পরবাস’, ‘কালোঘোড়া’, ‘মাটি ও মানুষের উপাখ্যান’, ‘পর’, ‘কেমন আছ সবুজপাতা’, ‘জীবনপুর’ ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য বই। তার দেড়শতাধিক নাটকের মধ্যে ‘কোন কাননের ফুল’, ‘বারো রকম মানুষ’, ‘রূপনগর’, ‘যুবরাজ’, ‘কোথায় সেজন’, ‘আলতা’, ‘একজনা’, ‘নীলু’, ‘তোমাকেই’, ‘ছোছা কদম’, ‘আঁচল’, ‘খুঁজে বেড়াই তারে’, ‘কোন গ্রামের মেয়ে’, ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’ বিপুল দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে।
কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ‘চিত্তরঞ্জন দাশ স্বর্ণপদক’ পেয়েছেন। ২০০৬ সালে জাপান ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘তাকেশি কায়েকো মেমোরিয়াল এশিয়ান রাইটারস লেকচার সিরিজে’ বাংলাভাষার একমাত্র লেখক হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার আইআইপিএম-সুরমা চৌধুরী মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডও তিনি লাভ করেছেন।