ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (আইজিআই), ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর। পালামে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটি ৫,১০৬ একর (২,০৬৬ হেক্টর) জুড়ে বিস্তৃত। ১৯৬২ সালে বেসামরিক উড়ানের জন্য সফদারজং বিমানবন্দর থেকে এখানে স্থানান্তরিত হয়। প্রথমে পালাম বিমানবন্দর নামে পরিচিত, ২রা মে ১৯৮৬ সালে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নামে এর নামকরণ করা হয়।
আইজিআই বিমানবন্দর বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ: যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে এটি ভারতের ব্যস্ততম বিমানবন্দর; ২০১৮ সালে প্রায় ৭ কোটি যাত্রী পরিবহন করে এটি বিশ্বের ১২তম ব্যস্ততম বিমানবন্দর হিসেবে স্থান পায়। এছাড়াও এটি এয়ারবাস এ৩২০ বিমানের জন্য বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দর। বিমানবন্দরটিতে একটি উন্নত ব্যবস্থা, এয়ারপোর্ট কোলাবরেটিভ ডিসিশন মেকিং (এ-সিডিএম) ব্যবহৃত হয়, যা উড্ডয়ন ও অবতরণকে নিয়মিত ও পূর্বাভাসযোগ্য রাখতে সাহায্য করে।
আইজিআই বিমানবন্দরের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের ইতিহাস বেশ চিত্তাকর্ষক। ২০০৬ সালে জিএমআর গ্রুপের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম দিল্লি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট লিমিটেড (ডিআইএএল) এর কাছে বিমানবন্দরটির পরিচালনার দায়িত্ব হস্তান্তরিত হয়। ২০০৮ সালে ৪,৪৩০ মিটার দীর্ঘ রানওয়ের উদ্বোধন করা হয়, এবং ২০১০ সালে টার্মিনাল ৩ এর পরিচালনা শুরু হওয়ার সাথে সাথে এটি ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বিমান চলাচল কেন্দ্রে পরিণত হয়। টার্মিনাল ৩ বার্ষিক ৩.৪ কোটি যাত্রী পরিচালনা করার ক্ষমতা রাখে।
আইজিআই বিমানবন্দর অনেক পুরষ্কার পেয়েছে। ২০১০ সালে এটিকে বিশ্বের চতুর্থ সেরা বিমানবন্দর এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সেরা উন্নত বিমানবন্দর হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে এটি বিশ্বের সেরা বিমানবন্দর এবং মধ্য এশিয়ার সেরা বিমানবন্দর হিসাবে ও স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৭ সালে মুম্বই বিমানবন্দরের সাথে যৌথভাবে এটি বিশ্বের সেরা বিমানবন্দর হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
বিমানবন্দরটি এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, স্পাইসজেট সহ অনেক ভারতীয় এবং বিদেশী বিমান সংস্থার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমানে তিনটি সক্রিয় যাত্রী টার্মিনাল, একটি উৎসর্গীকৃত হজ টার্মিনাল এবং একটি পণ্যসম্পর্কীয় টার্মিনাল রয়েছে। বিমানবন্দরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আরও টার্মিনাল নির্মাণ এবং যাত্রী পরিচালনার ক্ষমতা বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।