ইউনিয়ন পরিষদ বা সঙ্ঘ পরিষদ বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকার সর্বনিম্ন প্রশাসনিক ও স্থানীয় সরকারের একক। ১৮৭০ সালের গ্রাম চৌকিদারি আইনের মাধ্যমে এর সূচনা হয়। প্রাথমিকভাবে গ্রামের নিরাপত্তা ও কর আদায়ের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকলেও, পরবর্তীতে এটি স্থানীয় সরকারের মূল ভিত্তি হিসেবে গড়ে উঠে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৪৫৭৮ টির বেশি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে।
প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের নেতৃত্বে থাকে একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং নয়টি ওয়ার্ডের ৯ জন সাধারণ সদস্য এবং সংরক্ষিত তিনটি আসনের তিনজন মহিলা সদস্য। এই সদস্যরা প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে ৫ বছর মেয়াদে নির্বাচিত হন।
ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন, স্যানিটেশন, জন্ম নিবন্ধন, জনগণনার কাজ, নাগরিক অবস্থা রেজিস্টার রক্ষণাবেক্ষণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা।
ইউনিয়ন পরিষদের ইতিহাস: ইউনিয়ন পরিষদের নাম ও কাঠামো বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের পর ইউনিয়ন কাউন্সিল থেকে ইউনিয়ন পঞ্চায়েত এবং পরে ইউনিয়ন পরিষদ নামকরণ করা হয়। ১৯৭৬ সালে স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়, এবং ২০০৯ সালের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন বর্তমানে কার্যকর রয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়ন: ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল সরকারি অনুদান, স্থানীয় কর এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসে। চেয়ারম্যান ও সদস্যরা সরকারি পূর্ণকালীন বেতন পান।
জনগণের সেবা: প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ একটি নাগরিক চার্টার প্রকাশ করে, যেখানে পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত সকল সেবা এবং সেগুলোর প্রক্রিয়া বিস্তারিতভাবে বর্ণিত থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা জনগণের কাছে সহজলভ্য করার চেষ্টা চলছে।