আস্তানা: কাজাখস্তানের উদীয়মান রাজধানী
মধ্য এশিয়ার রাষ্ট্র কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানা (পূর্ব নাম: নুর-সুলতান, আগে আকমোলিনস্ক ও ৎসেলিনোগ্রাদ) দেশটির উত্তর-মধ্যভাগে ইশিম নদীর কাছে অবস্থিত। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এই স্থানটি ১৮২৪ সালে রুশ সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৭ সালে আলমাতি থেকে রাজধানী স্থানান্তরের পর আস্তানার অভূতপূর্ব উন্নয়ন শুরু হয়।
ঐতিহাসিক পটভূমি: ১৮২৪ সালে আকমোলিনস্ক নামে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে এটি প্রশাসনিক কেন্দ্রে পরিণত হয়। ১৯৩৯ সালে এটি ওবলাস্ত (প্রদেশ) হিসেবে মর্যাদা পায়। সোভিয়েত আমলে অকৃষ্ট ভূমি অভিযানের ফলে ১৯৬০ সালে এর নামকরণ হয় ৎসেলিনোগ্রাদ (
অকৃষ্ট ভূমির নগরী)। ১৯৯১ সালে কাজাখস্তানের স্বাধীনতার পর ১৯৯২ সালে আগমোলা এবং ১৯৯৮ সালে আস্তানা নামকরণ হয়। ২০১৯ সালে নুর-সুলতান নামকরণ করা হয় এবং ২০২২ সালে আবার আস্তানা করা হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা: ইশিম নদীর তীরে অবস্থিত আস্তানার জনসংখ্যা ২০১৭ সালে ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। কাজাখ, রুশ, ইউক্রেনীয়, তাতার, জার্মানসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ এখানে বসবাস করে। আস্তানা হল পৃথিবীর দ্বিতীয় শীতলতম রাজধানী (উলানবাটোরের পর)।
অর্থনীতি ও অবকাঠামো: আস্তানা কাজাখস্তানের বাণিজ্য ও অর্থনীতির কেন্দ্র। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে এখানে শুল্কমুক্ত আমদানি-রপ্তানি এবং কর সুবিধা রয়েছে। আন্তঃকাজাখস্তান ও দক্ষিণ সাইবেরীয় রেলপথের সংযোগস্থলে অবস্থিত এই শহরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন কেন্দ্র। মাংস-প্রক্রিয়াকরণ, কৃষি যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন এর প্রধান শিল্প।
নগর পরিকল্পনা ও স্থাপত্য: আস্তানার নকশায় বিশ্বখ্যাত স্থপতিদের অবদান রয়েছে। নতুন প্রশস্ত রাস্তাঘাট, আধুনিক ভবন,
শান্তি ও রফা প্রাসাদ
এই শহরকে দিয়েছে অনন্য সৌন্দর্য।
ধর্ম ও সংস্কৃতি: ইসলাম এখানকার প্রধান ধর্ম। খ্রিস্টান, ইহুদী ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীও রয়েছে। ২০০৬ সালে নির্মিত
প্যালেস অব পিস অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন
বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থানের প্রতীক। আস্তানা এফসি ,
এখানকার প্রধান ফুটবল দল।
মূল্যায়ন: আস্তানা কেবল কাজাখস্তানের রাজধানী নয়, এটি একটি আধুনিক, উন্নয়নশীল ও ঐতিহাসিক মূল্য সম্পন্ন শহর। এর অভূতপূর্ব উন্নয়ন ,
দেশটির অর্থনৈতিক ,
সামাজিক অগ্রগতির প্রতীক।