আলবেনিয়া: ইউরোপের বলকান উপদ্বীপের রত্ন
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বলকান উপদ্বীপের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত আলবেনিয়া (আলবেনীয় ভাষায়: Shqipëri), আদ্রিয়াতিক সাগর ও আয়োনীয় সাগরের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যে পরিবেষ্টিত একটি রাষ্ট্র। প্রায় ২৯ লক্ষ জনসংখ্যার এই দেশটির আয়তন ২৮,৭৪৮ বর্গকিলোমিটার। 'ঈগলদের দেশ' নামে পরিচিত আলবেনিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী তিরানা। ৭০% ভূমি পর্বতময় হলেও, এর উপকূলীয় তটরেখা ৩৬২ কিলোমিটার বিস্তৃত। দেশটির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ দিবারের কোরাব (২,৭৫৩ মিটার)।
ঐতিহাসিক অতীত:
আলবেনিয়ার ইতিহাস রোমান, বাইজেন্টীয়, ও উসমানীয় শাসনের অধীনে কেটেছে। ১৫শ শতকে উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে আসার পর, ১৯১২ সালে আলবেনিয়া স্বাধীনতা অর্জন করে। স্কেন্দারবেগ (গিয়ের্গি কাস্ত্রিওতি) আলবেনিয়ার জাতীয় নায়ক হিসেবে পরিচিত। ১৯৪৪ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশটি সাম্যবাদী শাসনের অধীনে ছিল। ১৯৯১ সালে গণতন্ত্র ও বাজার অর্থনীতির দিকে ধীরে ধীরে রূপান্তর শুরু হয়।
ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য:
উত্তর-পশ্চিমে আল্পস পর্বতমালা ও দক্ষিণ-পূর্বে পিন্ডাস পর্বতমালার অবস্থান আলবেনিয়ার ভূপ্রকৃতিকে মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে। উপকূলীয় সমভূমি, পাহাড়ি অঞ্চল ও অরণ্যের সমন্বয়ে গঠিত এই দেশটিতে বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদ ও প্রাণীজগৎ বিদ্যমান।
অর্থনীতি:
আলবেনিয়া একটি উন্নয়নশীল দেশ। কৃষি, পর্যটন ও খনিজ সম্পদ (তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, বক্সাইট) অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ লাভের লক্ষ্যে আলবেনিয়া অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সংস্কারে নিযুক্ত।
সংস্কৃতি:
আলবেনিয়ার সংস্কৃতি গ্রিক, রোমান, বাইজেন্টীয়, তুর্কি ও ইতালীয় সংস্কৃতির সমন্বয়ে গঠিত। ঐতিহ্যবাহী পোশাক, সঙ্গীত ও নৃত্য আলবেনিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক।
বর্তমান অবস্থা:
আলবেনিয়া একটি সংসদীয় গণতন্ত্র। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের জন্য দেশটি কাজ করে যাচ্ছে। পর্যটন খাতের বিকাশে আলবেনিয়া উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করছে। তবে দুর্নীতি ও অবকাঠামো সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ এখনও বিদ্যমান।