আমনুরা রেলওয়ে জংশন: একটি ঐতিহাসিক স্টেশনের কাহিনী
বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আমনুরা রেলওয়ে জংশন রেলপথের ইতিহাসের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ১৯১৫-১৬ সালের মধ্যে সারা-সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে কোম্পানি কর্তৃক নির্মিত সারাঘাট-সিরাজগঞ্জ লাইনের একটি শাখা হিসাবে ১৯৩০ সালে আব্দুলপুর-আমনুরা ব্রডগেজ লাইন চালু হয় এবং আমনুরা রেলওয়ে স্টেশন তখনকার সময়ে আব্দুলপুর-আমনুরা শাখা লাইনের সর্বশেষ স্টেশন হিসাবে কার্যকরী হয়।
আমনুরা জংশন থেকে গোদাগাড়ী ঘাট পর্যন্ত একটি ব্রডগেজ রেলপথ ছিল যা এখন বিলুপ্ত। প্রাথমিকভাবে এটি মিটারগেজ লাইন ছিল। ১৯০৯ সালে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে গোদাগাড়ী ঘাট থেকে আমনুরা, রহনপুর, সিঙ্গাবাদ পর্যন্ত মিটার গেজ লাইন চালু করে। শিয়ালদা থেকে লালগোলা ঘাট (পদ্মার দক্ষিণ পাড়) ব্রডগেজ ট্রেনে এসে, রেলফেরি করে পদ্মা পার হয়ে, গোদাগাড়ী ঘাটে মিটার গেজ ট্রেনে উঠে মালদা, কাটিহার, শিলিগুরি যাত্রীরা যাতায়াত করত।
১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর, গোদাগাড়ী ঘাট-আমনুরা-রহনপুর মিটার গেজ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার (ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে) আমনুরা-রহনপুর পর্যন্ত মিটার গেজ লাইন ব্রডগেজে রুপান্তরিত করে। গোদাগাড়ী ঘাট থেকে আমনুরা পর্যন্ত অংশ অলাভজনক হওয়ার কারণে ২৩.৩৩ কিমি মিটার গেজ লাইন তুলে ফেলা হয়। পরে ৬০-এর দশকে ভারত সিঙ্গাবাদ পর্যন্ত তাদের মিটার গেজ লাইন ব্রডগেজে রূপান্তর করে, এবং ৮০-এর দশকে বাংলাদেশ রেলওয়ে রহনপুর থেকে সিঙ্গাবাদে যোগাযোগ স্থাপন করে। বর্তমানে এই লাইনে মূলত পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করে।
আমনুরা বাইপাস রেলওয়ে স্টেশন চালু হওয়ার পর, আমনুরা জংশন দিয়ে রাজশাহী কমিউটার, ১৬ নং মহানন্দা এক্সপ্রেস, লোকাল ট্রেন এবং পন্যবাহী ট্রেন চলাচল করে। বর্তমানে আমনুরা রেলওয়ে জংশনের অবস্থা এবং সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের অভাব রয়েছে। আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে আরও তথ্য পাওয়া গেলে এই নিবন্ধটি আরও সমৃদ্ধ করা যাবে।