আবু জাফর নামটি বাংলাদেশের ইতিহাস ও সাহিত্যে একাধিক ব্যক্তির সাথে জড়িত। এই নামের তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জীবনী সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
- *১. মোহাম্মদ আবু জাফর (জন্ম ১ মার্চ ১৯৬৩):** একজন বাংলাদেশী বেসামরিক কর্মকর্তা ও ক্যারিয়ার কূটনীতিক। তিনি বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার জন্ম তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ)। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিতে বিএসসি এবং প্যারিসের ইকোলে ন্যাশনালে দে লা ফ্রান্স ডি অউট্রে-মের (আইআইএপি) থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা অর্জন করেন। প্রেস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। ১৯৮৭-৮৯ সালে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং ১৯৯০-৯১ সালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি বাংলাদেশি বিদেশী সেবায় যোগদান করেন।
- *২. আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ (১৯৩৪-২০০১):** একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী কবি ও সরকারি কর্মকর্তা। তার জন্ম বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর-ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ এবং যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে ডিপ্লোমা অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের কৃষি ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। এছাড়াও, তিনি FAO-এর এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের মহাপরিচালক ছিলেন। পঞ্চাশের দশকের অন্যতম কবি হিসেবে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি'। তিনি একুশে পদক ও বাংলা একাডেমী পুরষ্কার লাভ করেন।
- *৩. আবু জাফর শামসুদ্দীন (১৯১১-১৯৮৮):** একজন বিখ্যাত বাংলাদেশী সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ঢাকার গাজীপুরে তাঁর জন্ম। ‘অল্পদর্শী’ ছদ্মনামে দৈনিক সংবাদে লেখা তাঁর ‘বৈহাসিকের পার্শ্বচিন্তা’ কলাম ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তিনি ন্যাপ (ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি)-এর সাথে যুক্ত ছিলেন এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তিনি উপন্যাস, গল্প ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে ‘ভাওয়াল গড়ের উপাখ্যান’ উপন্যাসটি অন্যতম। তিনি একাধিক পুরষ্কার, যেমন একুশে পদক, লাভ করেন।