আবদুল কাদির (১৯০৬-১৯৮৪): বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ
আবদুল কাদির বাংলা সাহিত্যের এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান কবি, সাহিত্য সমালোচক, ছন্দবিশারদ এবং সুদক্ষ সম্পাদক। তার জীবনকাল বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়কালের সাক্ষী ছিল, এবং তিনি সেই সময়কালের প্রভাবকে তার রচনা ও সম্পাদনায় সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:
আবদুল কাদিরের জন্ম ১৯০৬ সালের ১লা জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামে। অতি শৈশবে তিনি মাতৃহারা হন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে লেটারসহ ম্যাট্রিক এবং ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.এ. পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।
সাহিত্য জীবন ও কর্ম:
আবদুল কাদিরের সাহিত্য জীবন বহুমুখী। তিনি কবিতা ও প্রবন্ধ রচনার পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকার সম্পাদনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। 'সওগাত', 'জয়তী', 'নবশক্তি', 'যুগান্তর', 'নবযুগ', 'মোহাম্মদী', 'পয়গাম', 'মাহে নও' সহ আরও অনেক পত্রিকায় তিনি কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও, তিনি কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের প্রকাশনা কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
তার উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে দিলরুবা (১৯৩৩) এবং উত্তর বসন্ত (১৯৬৭) কাব্যগ্রন্থ। ছন্দ সমীক্ষণ (১৯৭৯) গ্রন্থটি বাংলা ছন্দ সম্পর্কে তার গভীর জ্ঞান ও গবেষণার সাক্ষ্য বহন করে। তিনি নজরুল ইসলাম, রোকেয়া, শিরাজী, ইয়াকুব আলী চৌধুরী, আবুল হুসেন সহ অনেক বিখ্যাত সাহিত্যিকের রচনাবলীর সম্পাদনা করে বাংলা সাহিত্যের ঋণী হয়েছেন। তার সম্পাদিত 'নজরুল রচনাবলী' (৫ খণ্ড) বাংলা সাহিত্যে একটি স্মরণীয় অবদান।
সম্মাননা ও পুরষ্কার:
আবদুল কাদিরের সাহিত্যকীর্তির জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, মুক্তধারা পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার প্রভৃতি অর্জন করেন।
মৃত্যু:
আবদুল কাদির ১৯৮৪ সালের ১৯শে ডিসেম্বর ঢাকায় মারা যান।
সারসংক্ষেপ:
আবদুল কাদির বাংলা সাহিত্যের একজন অসামান্য ব্যক্তিত্ব, যিনি কবি, সমালোচক, ছন্দবিশারদ এবং সম্পাদক হিসাবে অমূল্য অবদান রেখেছেন। তার জীবন ও কর্ম বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে স্থায়ী স্মৃতি রেখে গেছে।
disambiguesTitle
Key Information List:
- আবদুল কাদির ছিলেন একজন প্রতিভাবান কবি, সাহিত্য সমালোচক, ছন্দবিশারদ ও সম্পাদক।
- তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকার সম্পাদনার সাথে জড়িত ছিলেন।
- 'নজরুল রচনাবলী' সম্পাদনার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে অমূল্য অবদান রেখেছেন।
- তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার, একুশে পদকসহ অনেক পুরষ্কার লাভ করেন।