আড়ং: বাংলার ঐতিহ্যের সাক্ষী
আড়ং শব্দটি ফারসি শব্দ, যার অর্থ বৃহৎ বাজার। ইংরেজি ঔপনিবেশিক আমলে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার বিভিন্ন স্থানে কারিগরদের কেন্দ্রীভূত করে উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য 'আড়ং' স্থাপন করেছিল। এগুলো ছিল কেবল বাজার নয়, উৎপাদন কেন্দ্রও। এই আড়ংগুলির মাধ্যমে কোম্পানি বাংলার বস্ত্রশিল্প এবং বাণিজ্যের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল।
আঠারো শতকে লক্ষ্মীপুর (নোয়াখালী), জাগদিয়া (নোয়াখালী), কুমারখালী (যশোর), এবং রামপুর-বোয়ালিয়া (রাজশাহী) ছিল কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ আড়ং। এছাড়াও ভগবানগোলা, কাসিমবাজার, ঢাকা ও সিলেটে অন্যান্য আড়ং গড়ে উঠেছিল। মুগল আমলে আড়ং বৃহৎ বস্ত্র বাজার হিসেবে পরিচিত ছিল, যদিও অন্যান্য দ্রব্যাদিও এখানে ক্রয়-বিক্রয় হতো।
আধুনিক যুগে নগরায়ণ এবং উৎপাদন প্রক্রিয়ার পরিবর্তনের ফলে ঐতিহ্যবাহী আড়ংগুলি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে 'আড়ং' নামটি বিপণি কেন্দ্র এবং ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের আকারে আজও টিকে আছে, যা আমাদের ঐতিহ্যের সাথে একটি সংযোগ রক্ষা করে। সিরাজুল ইসলামের গবেষণা এই ঐতিহাসিক বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরে।