অ্যালিস মুনরো: সমকালীন ছোটগল্পের এক অমর নক্ষত্র
কানাডার বিশিষ্ট ছোটগল্পকার অ্যালিস মুনরো (১০ জুলাই, ১৯৩১ - ১৩ মে, ২০২৪) সাহিত্যের অমিত সম্পদে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র যার প্রভাবে আলোকিত হয়েছে বিশ্ব সাহিত্য। ৯২ বছর বয়সে তার মৃত্যু হলেও, তার অমিত অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ২০১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করে তিনি বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন। তার ছোটগল্পগুলোর স্বাতন্ত্র্য লুকিয়ে আছে অনন্য বিষয়বস্তু, সাবলীল আঙ্গিক ও মনোমুগ্ধকর ভাষায়।
তিনি কানাডার অন্টারিও প্রদেশের উইংহ্যামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা রবার্ট এরিক লেইডলো ছিলেন পশুপালক, এবং মা অ্যানি ক্লার্ক স্কুলশিক্ষক। প্রকৃতির কোলে কাটে তার শৈশব। ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা ও ইংরেজি সাহিত্যে পড়ালেখা করেন। ১৯৫০ সালে তার প্রথম গল্প ‘ডায়মেনশন্স অব অ্যা শ্যাডো’ প্রকাশিত হয়।
মূলত ছোটগল্পের মাধ্যমে সাহিত্যে খ্যাতি অর্জন করেন অ্যালিস মুনরো। ‘ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস’ (১৯৬৮) ছিল তার প্রথম গল্প সংকলন। পরবর্তীতে লাইভস অব গার্লস অ্যান্ড উইমেন (১৯৭১), সামথিং আই হ্যাভ বিন মিনিং টু ইউ (১৯৭৪) সহ আরও অনেক গল্প সংকলন প্রকাশিত হয়। তার লেখায় অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ চরিত্রায়ন, জটিল পারিবারিক সম্পর্ক এবং সাধারণ মানুষের জীবনের বাস্তব চিত্র ফুটে ওঠে।
তার গল্পে প্রায়শই উঠে আসে দক্ষিণ-পশ্চিম অন্টারিওর হুরন কাউন্টির গ্রামীণ জীবন। তার লেখনীতে আন্তন চেখভের প্রভাব স্পষ্ট দেখা যায়, যার কারণে অনেক সমালোচক তাঁকে ‘কানাডার চেখভ’ আখ্যায়িত করেছেন।
অ্যালিস মুনরোর সাহিত্যকর্ম বিশ্ব সাহিত্যের এক মূল্যবান অবদান। নোবেল পুরস্কার সহ অন্যান্য অনেক সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। তার গল্প বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে, এবং পাঠকদের মনে চিরস্থায়ী স্থান দখল করে নিয়েছে।