কম্বোডিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক হুন সেন
হুন সেন (খেমার: ហ៊ុន សែន; জন্ম: ৫ আগস্ট, ১৯৫২) কম্বোডিয়ার একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং দীর্ঘদিনের শাসক। ক্যাম্পং চেম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী হুন সেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৩৮ বছরেরও অধিক সময় ক্ষমতায় ছিলেন (১৯৮৫-২০২৩), যা কম্বোডিয়ার ইতিহাসে একটি অনন্য রেকর্ড। তিনি কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) -এর সভাপতি এবং কান্ডাল প্রদেশ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যও ছিলেন। তার পূর্ণাঙ্গ সম্মানসূচক পদবী ‘সামদেক আকিক মহা সেনা পাদে টেকো হুন সেন’, যার অর্থ ‘প্রভু প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিম মিলিটারী কমান্ডার হুন সেন’। শৈশবে তার নাম ছিল হুন বুনাল। ১৯৭২ সালে খেমার রুজে যোগদানের দুই বছর পর তিনি তার নাম পরিবর্তন করেন।
হুন সেন এক কৃষক পরিবারের সন্তান। তার বাবা হান নিয়াং এবং মা ডি ইয়ন। তার পৈতৃক দাদা টিওচিউ চাইনিজ এলাকার এক সমৃদ্ধ ভূস্বামী ছিলেন। ১৩ বছর বয়সে তিনি নম পেনের সন্ন্যাসীদের পরিচালিত একটি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৭০ সালে লন নল ক্ষমতায় আসার পর তিনি খেমার রুজে যোগদান করেন। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৬ এবং ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সময়কালে তিনি কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ৩২ বছর ১৬২ দিন বয়সে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হন।
১৯৮৪ সালে চান সাইয়ের মৃত্যুর পর জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ কেপিআরপি দলের পক্ষ থেকে তাকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়। ১৯৯৩ সালের নির্বাচনে পরাজিত হলেও তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং ফানসিনপেক পার্টির সাথে যৌথভাবে সরকার পরিচালনা করেন। ১৯৯৭ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতায় আসেন এবং ১৯৯৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং তাঁর ছেলে হুন মানেত ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি তার স্ত্রী বান রেনির সাথে পরিচিত হন। যুদ্ধে তার বাম চোখ মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ২০১০ সালে তার ছেলে মানেত রাজকীয় কম্বোডীয় সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। তার বড় ভাই হান নেং ক্যামপং চেমের সাবেক গভর্নর এবং বর্তমানে সংসদ সদস্য।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তার পুত্র হুন মানেতের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।