হিরোশিমা: একটি শহর, যা শান্তির প্রতীক হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। জাপানের হোন্শু দ্বীপের চুগোকু অঞ্চলে অবস্থিত এই শহরটি হিরোশিমা প্রশাসনিক অঞ্চলের রাজধানী। ১৫৮৯ সালে মোরি টেরুমোটো কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হিরোশিমা প্রাথমিকভাবে একটি দুর্গ শহর ছিল। মেইজি পুনঃস্থাপন (১৮৬৮) পরে এটি দ্রুত একটি শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের সামরিক কার্যকলাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল হিরোশিমা।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট, স্থানীয় সময় ৮টা ১৫ মিনিটে, আমেরিকান বিমান বাহিনীর ‘এনোলা গে’ নামক বিমান হিরোশিমার উপর ‘লিটল বয়’ নামক পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে। এই ঘটনা ইতিহাসে প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলার নজির স্থাপন করে। বোমা বিস্ফোরণের ফলে শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং ৯০,০০০ থেকে ১৬৬,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়। এই ভয়াবহ ঘটনার স্মৃতি রক্ষার্থে হিরোশিমা শান্তি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে, যা ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত।
যুদ্ধের পরে হিরোশিমা পুনর্নির্মাণ করা হয় এবং পশ্চিম হোনশু অঞ্চলে এটি বৃহত্তম শহরে পরিণত হয়। বর্তমানে হিরোশিমার জনসংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষ। শহরটির অর্থনীতি পর্যটন, শিল্প ও বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল। হিরোশিমা শান্তি প্রচারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হিরোশিমা শহরের পুনর্নির্মাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা বিশ্বের অন্যান্য শহরের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস। এটি একটি শান্তির শহর হিসেবে পরিচিত এবং বহু আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন আয়োজন করে।