জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের মৃত্যুতে শোকাহত গোটা বাংলাদেশ। ১৩ বছর ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে, ৩০ জুলাই ২০২৪ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। জন্ম ১৯৬৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। তিনি স্ত্রী, উপস্থাপক সংগীতা আহমেদ ও এক কন্যাসন্তান রেখে গেছেন।
২০১১ সালে জুয়েলের লিভার ক্যান্সার ধরা পড়ে। পরবর্তীতে ফুসফুস ও হাড়েও ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে। দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলে। গত অক্টোবর থেকে তাকে প্যালিয়েটিভ কেয়ারে রাখা হয়েছিল। শেষ জীবনে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
ব্যান্ড সংগীতের জনপ্রিয়তার সময় ব্যতিক্রমী কণ্ঠের অধিকারী জুয়েল স্বতন্ত্র স্থান করে নেন। ব্যাংকার বাবার চাকরির সুবাদে শৈশবে তাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকতে হয়। মা-বাবার অনুপ্রেরণায় গানের জগতে পা রাখেন তিনি। প্রথম শ্রেণিতে পড়াকালীন এক প্রতিবেশীর কাছে গান শেখেন এবং চতুর্থ শ্রেণিতে প্রথম মঞ্চে গান গান।
১৯৮৬ সালে ঢাকায় চলে আসেন জুয়েল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-কেন্দ্রিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তার প্রথম অ্যালবাম ‘কুয়াশা প্রহর’ ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত হয়। তারপর একে একে প্রকাশিত হয় ‘এক বিকেলে’, ‘আমার আছে অন্ধকার’, ‘একটা মানুষ’, ‘দেখা হবে না’, ‘বেশি কিছু নয়’, ‘বেদনা শুধুই বেদনা’, ‘ফিরতি পথে’, ‘দরজা খোলা বাড়ি’, এবং ‘এমন কেন হলো’। ‘এক বিকেলে’ অ্যালবামটি সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পায়।
জুয়েল একজন সংগীতশিল্পী ছাড়াও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের সাথে যুক্ত ছিলেন। আর্থিক ও মানসিক দিক বিবেচনা করে তিনি দুটি পেশায় জড়িত ছিলেন। গান তিনি করতেন হৃদয়ের টানে।
জুয়েলের অকাল মৃত্যুতে বাংলাদেশের সংগীত ও টেলিভিশন জগতে গভীর শোক নেমে এসেছে। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে, পরিবার ও প্রিয়জনদের প্রতি সমবেদনা জানাই।