হাজারীবাগ থানা: ঢাকা মহানগরীর একটি গুরুত্বপূর্ণ থানা হিসেবে হাজারীবাগের ইতিহাস, ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব ব্যাপক। পুরান ঢাকার অংশ হিসেবে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত হাজারীবাগের আয়তন ৩.৫৮ বর্গ কিলোমিটার। ২০১১ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বিভাজনের পর এটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অধীনে চলে আসে।
ঐতিহাসিকভাবে, হাজারীবাগ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ চামড়া প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র ছিল। যদিও পরবর্তীতে সাভারে স্থানান্তরিত হয়, তবুও এর ঐতিহ্য এখনও টিকে আছে। হাজারীবাগের বিভিন্ন মহল্লা যেমন নিলাম্বর সাহা রোড, ভাগলপুর লেন, বাড্ডানগর লেন, গণকটুলী লেন, মনেশ্বর রোড, শেরে বাংলা রোড, জিগাতলা, হাজারীবাগ রোড, বোরহানপুর, বটতলা, কালুনগর, কুলাল মহল, কাজীরবাগ, এনায়েতগঞ্জ, হাজারীবাগ লেন, নবীপুর ও গজমহল এর ঐতিহ্য এলাকার ঐতিহ্যকে ধারণ করে। এছাড়াও রায়েরবাজার ও বসিলা হাজারীবাগ থানার অন্তর্গত উল্লেখযোগ্য এলাকা।
জনসংখ্যার দিক থেকে, হাজারীবাগ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করে। অর্থনীতিতে ব্যবসা, চাকুরি, ছোট-বড় শিল্প কারখানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষার দিক থেকে, বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজি, সালেহা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মুকুলিকা শিক্ষালয়, হাজারীবাগ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, শেখ রাসেল সরকারী স্কুল, ফজিলতুন্নেছা সরকারী কলেজ, জাতীয় তরুণ সংঘ শিক্ষা নিকেতন ও গজমহল ট্যানারী উচ্চ বিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য। লেখক ও নির্মাতা হামযা মুহাম্মদ হাবিব এর বাসস্থানও এখানে।
সাম্প্রতিককালে, সরকার হাজারীবাগের পরিবেশ ও উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ট্যানারী পল্লী স্থানান্তরের পর ঐ জায়গায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। হাজারীবাগ থানা ঢাকা মহানগরীর একটি জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির একটি মেলবন্ধন।