উচ্চ রক্তচাপ: একটি বিস্তারিত আলোচনা
উচ্চ রক্তচাপ, বা হাইপারটেনশন (Hypertension), একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা যা দীর্ঘদিন ধরে রক্তনালীতে রক্তচাপের অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে দেখা দেয়। এটি প্রায়শই কোনো লক্ষণ ছাড়াই থাকে, কিন্তু স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি রোগ এবং অন্যান্য গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করার ঝুঁকি ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে তোলে।
উচ্চ রক্তচাপকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়: প্রাথমিক (Essential) এবং গৌণ (Secondary)। প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপের কোনো নির্দিষ্ট কারণ শনাক্ত করা যায় না, যদিও জিনগত প্রবণতা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, মেদবহুলতা, ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন এবং শারীরিক অলসতা এর প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত। গৌণ উচ্চ রক্তচাপ অন্য কোনো রোগের (যেমন, কিডনি রোগ, থাইরয়েড রোগ) ফলে হয়।
রক্তচাপ পরিমাপের দুটি মান থাকে: সিস্টোলিক (উপরের) এবং ডায়াস্টোলিক (নীচের)। ১৪০/৯০ mmHg অথবা তার বেশি রক্তচাপকে উচ্চ রক্তচাপ বলে মনে করা হয়। ১২০/৮০ mmHg থেকে ১৩৯/৮৯ mmHg এর মধ্যবর্তী রক্তচাপকে 'প্রিহাইপারটেনশন' বলে, যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বহন করে।
উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় জীবনযাত্রার পরিবর্তন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওজন কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম, লবণের ব্যবহার কমানো, সুষম খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ এইগুলি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যদি জীবনযাত্রার পরিবর্তন পর্যাপ্ত না হয়, তাহলে ওষুধের সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের রক্তচাপের ওষুধ বাজারে পাওয়া যায়, যা চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রহণ করা উচিত।
উচ্চ রক্তচাপ একটি চুপচাপ খুনী, তাই নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে এটি সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং জটিলতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।