হাঁস পালন

হাঁস পালন: নাটোরের হালতিবিলের নারীদের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের উৎস

নাটোরের হালতিবিল, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিল, বর্ষাকালে পানিতে ডুবে থাকে। এই পানি আর বিলের প্রাকৃতিক পরিবেশ হাঁস পালনের জন্য এক অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। হালতিবিলের আশপাশের গ্রামগুলো যেমন- খোলাবাড়িয়া, হালতি, দিঘীরপাড়, একডালা, কোচকুড়ি-এর নারীরা বহু বছর ধরে হাঁস পালন করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

বর্ষার অবসর সময়ে গ্রামীণ নারীরা কাঁথা সেলাই, জাল বুনে সময় কাটাতেন। কিন্তু বর্তমানে তারা হাঁস পালনে সময় কাটাচ্ছেন। বর্ষার শুরুতেই তারা হাঁসের ডিম বা বাচ্চা সংগ্রহ করে। রাজহাঁস, পাতিহাঁস ও চিনাহাঁস প্রাকৃতিক উৎস, বাড়ির উচ্ছিষ্ট খাবার, শামুক-ঝিনুক, ধানের কুড়া, ধান-চাল ও ঘাস খেয়ে সহজেই লালন পালন করা যায়। চার থেকে পাঁচ মাসেই এগুলো বিক্রয় উপযোগী হয়। একটি পাতিহাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকা দরে, রাজহাঁস ১৮০০-২০০০ টাকা এবং চিনাহাঁস ১৪০০-১৫০০ টাকা দরে।

খোলাবাড়িয়া গ্রামের তানজিলা বেগম ৫০টি পাতিহাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা তুলে ৪০টি বড় করেছেন। ছালেহা বেগম ও সাবিনা বেগমসহ অন্যরাও হাঁস পালনে লাভবান হচ্ছেন। হালতিবিলের প্রতিটি বাড়িতে গড়ে ৩০-৫০টি রাজহাঁস ও ৪০-৮০টি পাতিহাঁস লালন পালন করা হচ্ছে, যার ফলে বর্ষাকালে এ বিলে প্রায় ১০ লাখ হাঁসের উৎপাদন হয়। নাটোর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ২৫০টি পারিবারিক ও বাণিজ্যিক হাঁসের খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রায় ৬ লাখের বেশি হাঁস লালন পালন করা হয়। প্রাণিসম্পদ অফিসার ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন জানান, শামুক-ঝিনুক, পোকামাকড়, ভুসি ও ভাত খাওয়ালে হাঁস পালন সহজ ও লাভজনক হয়। এতে মানুষের খাদ্য তালিকায় মাংস ও ডিমের চাহিদা পূরণ সম্ভব। গ্রামীণ নারীদের হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশু লালন পালনে প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • হালতিবিলের নারীরা হাঁস পালন করে আর্থিক স্বাবলম্বীতা অর্জন করছে।
  • বর্ষাকালে স্বল্প খরচে হাঁস পালন সম্ভব।
  • প্রাকৃতিক খাদ্যের ওপর নির্ভর করে হাঁস পালন লাভজনক।
  • হাঁস পালন মাংস ও ডিমের চাহিদা পূরণে সহায়তা করছে।
  • প্রাণিসম্পদ বিভাগ গ্রামীণ নারীদের হাঁস পালনে উৎসাহ দিচ্ছে।

গণমাধ্যমে - হাঁস পালন

১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

হালতিবিলে হাঁস পালন করে গ্রামীণ নারীরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।