সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ

আপডেট: ২ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৮ এএম

ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ: জাতীয় জীবনের এক অমূল্য সম্পদ

ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ (১৮ জানুয়ারি ১৯৩২ - ১২ জুলাই ২০০৩) ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট আইনজ্ঞ, আইনজীবী এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞ। তিনি 'জাতির অভিভাবক' হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থেকে সর্বদা নিজেকে বিরত রেখেছেন। তার জীবনকালে তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং দুটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেন (১৯৯৬ ও ২০০১)।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন:

সৈয়দ ইশতিয়াক ১৯৩২ সালের ১৮ জানুয়ারি অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের যুক্ত প্রদেশের গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা, সৈয়দ জাফর আহমেদ, পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুর জেলার হিলির একজন জমিদার ও ব্যবসায়ী ছিলেন। হিলির রামানাথ ইংরেজি হাইস্কুলে ও কলকাতা মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর, দেশভাগের পর তিনি পরিবারের সাথে পূর্ব বাংলায় চলে আসেন। ১৯৪৮ সালে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আই.এ., ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৫৪ সালে এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন। পরে বৃটেন গিয়ে ১৯৫৮ সালে ইংল্যান্ডের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিকস থেকে অর্থনীতিতে এম.এসসি. ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবন:

১৯৬০ সাল থেকে আমৃত্যু আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন সৈয়দ ইশতিয়াক। তিনি ১৯৬১ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন শাস্ত্রের খন্ডকালীন অধ্যাপক, ১৯৭২ সালে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ১৯৭৬ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের তৃতীয় অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে (বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে) তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন উপদেষ্টা ছিলেন। ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে (বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বে)ও তিনি একইভাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বার কাউন্সিলের সদস্যও ছিলেন।

সম্মাননা ও স্মৃতি:

তার নামে আইন সাংবাদিকতায় পদক চালু করা হয়েছে। সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ১৯৫৫ সালের জুনে সুফিয়া আহমেদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সুফিয়া আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক ছিলেন। তাদের দুই সন্তান; পুত্র সৈয়দ রেফাত আহমেদ (বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি) এবং কন্যা রাইনা আহমেদ (চিকিৎসক)। সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ২০০৩ সালের ১২ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। তার অবদানের স্মরণে বিভিন্ন আলোচনা সভা ও অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

আমরা আশা করি এই সংক্ষিপ্ত লেখাটি সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে একটি ধারণা প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। আরও তথ্য পাওয়া গেলে আমরা তা আপডেট করে দিতে পারব।

মূল তথ্যাবলী:

  • ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট আইনজ্ঞ, আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ছিলেন।
  • তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন।
  • তিনি ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।
  • তাকে 'জাতির অভিভাবক' হিসেবেও অভিহিত করা হত।
  • তিনি ১৯৩২ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০০৩ সালে মারা যান।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।