বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এটি দুটি বিভাগে বিভক্ত: আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগ। হাইকোর্ট বিভাগ জনগণের কাছে ‘হাইকোর্ট’ নামেই বেশি পরিচিত। ১৯৭১ সালের পূর্বে এই ভবনে পূর্ব পাকিস্তানের উচ্চ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। সংবিধানের ৯৪ ধারায় সুপ্রিম কোর্টের গঠন ও কার্যাবলীর বিধান রয়েছে। এই ধারা অনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং প্রত্যেক বিভাগের জন্য যত সংখ্যক বিচারক প্রয়োজন বলে মনে হয়, সেই সংখ্যক বিচারকদের নিয়ে গঠিত হবে। প্রধান বিচারপতিকে 'বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি' বলা হয়। প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারকগণ কেবলমাত্র আপিল বিভাগে, আর অন্যান্য বিচারকগণ কেবলমাত্র হাইকোর্ট বিভাগে আসন গ্রহণ করবেন। সংবিধান অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারকগণ বিচারকার্যে সম্পূর্ণ স্বাধীন।
সংবিধানের ১০০ ধারা অনুযায়ী, ঢাকার রমনায় সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন অবস্থিত। তবে, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে প্রধান বিচারপতি অন্যত্রও হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে পারেন।
হাইকোর্ট বিভাগ নিম্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনাল থেকে আসা আপিল শুনানি করে। এছাড়াও, সংবিধানের ১০২ ধারার অধীনে রিট আবেদন, এবং কোম্পানি ও সামরিক বিষয়ক কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এদের মূল এখতিয়ার রয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগ থেকে আপিল আপিল বিভাগে করা যায়। ২০০৭ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে সুপ্রীম কোর্টকে নির্বাহী শাখা থেকে পৃথক করা হয়েছে।
বিচারপতি নিয়োগ সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে। প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত করেন, এবং প্রধান বিচারপতির পরামর্শে রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারকদের নিয়োগ দেন। প্রধান বিচারপতি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণে বাধ্য নন। হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারকদের প্রাথমিক নিয়োগ দুই বছরের জন্য হয়। সফল সমাপ্তির পরে, প্রধান বিচারপতির সুপারিশক্রমে রাষ্ট্রপতি তাদের স্থায়ী নিয়োগ দেন। বিচারকদের ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত পদে থাকার বিধান রয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্টে ৮৪ জন বিচারপতি ছিলেন, যার মধ্যে ২ জন আপিল বিভাগে এবং ৮২ জন হাইকোর্ট বিভাগে।
সুপ্রিম কোর্টের রায় এখনও ইংরেজিতে প্রদান করা হয়, যা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ অনেকেই রায় বাংলায় প্রদানের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছেন। বিচারপতিদের নিয়োগ, ক্ষমতা ও দায়িত্ব, এবং সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংবিধানের বিভিন্ন ধারায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।