সুপ্রিম কোর্ট: বিচার বিভাগের শীর্ষ স্তম্ভ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুপ্রিম কোর্ট নামে পরিচিত আদালতগুলো তাদের দেশের বিচার ব্যবস্থার শীর্ষে অবস্থান করে। এই আদালতের রায় চূড়ান্ত এবং অন্য কোন আদালত এর রায় পুনর্বিবেচনা করতে পারে না। সাধারণত আপিল আদালত হিসেবে কাজ করে সুপ্রিম কোর্ট। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি এখানেই হয়। তবে, সকল ‘সুপ্রিম কোর্ট’ই সর্বোচ্চ আদালত নয়, যেমন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সুপ্রিম কোর্ট বা কানাডার কিছু প্রাদেশিক সুপ্রিম কোর্ট উচ্চতর আপিল আদালতের অধীনস্থ।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট:
ভারতের সর্বোচ্চ আদালত, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট, সংবিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ আপিল আদালত ও সাংবিধানিক আদালত। এটি সাংবিধানিক পর্যালোচনার অধিকার রাখে। এই আদালত প্রধান বিচারপতি এবং ৩০ জন বিচারপতি নিয়ে গঠিত। এর মৌলিক, আপিল ও উপদেষ্টা ক্ষমতা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে এখানে আপিল করা যায়। নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষা এবং সরকারের অভ্যন্তরীণ বিবাদের নিষ্পত্তির জন্যও এটি কাজ করে। রাষ্ট্রপতির বিশেষ অনুরোধে সংবিধান সংক্রান্ত বিষয়েও শুনানি গ্রহণ করে। এছাড়াও, নিজ উদ্যোগে (‘সুয়ো মোটো’) বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত। ১৭৮৯ সালের বিচার বিভাগীয় আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত, পরে ১৮৬৯ সালে সংশোধন করা হয়। এটি একজন প্রধান বিচারপতি ও আটজন সহযোগী বিচারপতি নিয়ে গঠিত। বিচারপতিদের আজীবন মেয়াদ থাকে।
কলকাতা সুপ্রিম কোর্ট (ঐতিহাসিক):
১৭৭৩ সালে রেগুলেটিং অ্যাক্টের অধীনে কলকাতায় স্থাপিত হয়। কলকাতা শহর ও কোম্পানির পরিচালিত কুঠিগুলির জন্য প্রতিষ্ঠিত এটি। একজন প্রধান বিচারপতি ও তিনজন সহযোগী বিচারক নিয়ে গঠিত ছিল। কিন্তু এর এখতিয়ার নিয়ে বিতর্ক ছিল এবং ইউরোপীয়দের দ্বারা প্রায়ই নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হত। ১৮৬১ সালের ভারতীয় হাইকোর্ট অ্যাক্টের মাধ্যমে ১৮৬৫ সালে এর বিলুপ্তি ঘটে। কলকাতা, মাদ্রাজ ও বোম্বাইতে হাইকোর্ট স্থাপনের পর এটি অকার্যকর হয়ে পড়ে।