সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী

আপডেট: ৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩:৪৪ পিএম

বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী: একটি বিশ্লেষণ

২০১১ সালের ৩০শে জুন বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীতে সংবিধানে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়, যার মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত ছিল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা। তবে, ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এই সংশোধনীর কিছু অংশকে আংশিকভাবে অবৈধ ঘোষণা করে।

সংশোধনীর পটভূমি:

সংবিধান সংশোধনের জন্য ২০১০ সালে একটি বিশেষ সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাবেক রাষ্ট্রপতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই কমিটির আলোচনা ও পর্যালোচনার পর সংশোধনীর খসড়া প্রণয়ন করা হয়। ২৯শে মার্চ ২০১১ কমিটি তাদের সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়। পরবর্তীতে কিছু পরিবর্তন আনার পর ৩০শে জুন সংসদে বিলটি পাস করা হয়।

সংশোধনীর প্রধান বিষয়াবলী:

  • নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল।
  • শেখ মুজিবুর রহমানকে 'জাতির জনক' হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান।
  • রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি অন্তর্ভুক্তকরণ।
  • সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
  • জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা।
  • সংবিধান বহির্ভূতভাবে ক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে ঘোষণা।

হাইকোর্টের রায়:

২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে, পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু ধারা, বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের বিষয়টি, সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সাথে সাংঘর্ষিক বলে ঘোষণা করা হয়। এই রায়ের ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ উন্মোচিত হয়েছে।

উপসংহার:

বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী একটি বিতর্কিত ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই সংশোধনী দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং এর প্রভাব এখনও বিদ্যমান। হাইকোর্টের রায়ের পর এর ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত। আরও তথ্য উপলব্ধ হলে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করতে পারব।

মূল তথ্যাবলী:

  • ২০১১ সালের ৩০শে জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস।
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিধান অন্তর্ভুক্ত।
  • শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি।
  • ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
  • ২০২৪ সালে হাইকোর্ট আংশিক অবৈধ ঘোষণা করে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।