শাহারুল ইসলাম সুজন: একুশ বছর বয়সে ইসলামি সংগীতের উদয়োন
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কথায়, ‘আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ, স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি, আঠারো বছর বয়সেই অহরহ, বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি’। এই আঠারো বছর বয়সেই ইসলামি গানের গীতিকবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন শাহারুল ইসলাম সুজন। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তার গানের সংখ্যা ছাড়িয়েছে অর্ধশতাধিক!
খুলনার কয়রা উপজেলার হলুদবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহারুলের জন্ম ২০০৩ সালে। একুশ বছর বয়সে তিনি বহু গান-কবিতা রচনা করেছেন, যেগুলো শ্রোতাদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পেয়েছে। স্কুল জীবনেই লেখালেখির সূচনা। উচ্চমাধ্যমিকে পড়াকালীন বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় ছড়া-কবিতা পাঠাতেন, যেগুলো নিয়মিত ছাপা হতো। তবে ইসলামি গানের প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ইসলামি গান গাইতেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসলামি গানের শিল্পীদের সাথে পরিচয় হওয়ার পর নিজেই লেখা শুরু করেন। সংগীতের মাধ্যমে মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার লক্ষ্যই ছিল তার।
২০২১ সাল থেকে নিয়মিত ইসলামি গান লিখছেন। তার লেখা প্রথম প্রকাশিত গান ‘মিছে আশা’। নভেম্বর ২০২১ এটি প্রকাশিত হয় কলরব শিল্পীগোষ্ঠীর গায়ক তাহসিনুল ইসলামের কণ্ঠে। এটি অন্তর্জালে দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। ইতোমধ্যে তার লেখা ৪১টি গান প্রকাশিত হয়েছে, এবং আরও অনেক গান প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।
তার লেখা কিছু গান হলো—‘মিছে আশা’, ‘ক্ষণিকের জীবন’, ‘প্রেরণার আলো’, ‘বাবা হারানোর বেদনা’, ‘করতে হবে জয়’, ‘আমি বাংলার সন্তান’, ‘লাল সবুজের স্বাধীনতা’, ‘বিদায়ের ডাক’, ‘মুহাম্মদ রাসুল’, ‘পথশিশু’, ‘খোকার ইবাদত’, ‘এসেছে রমজান’ ইত্যাদি। ইসলামি গান লিখে তেমন পারিশ্রমিক পায় না, তবে তার লক্ষ্য আত্মিক শান্তি এবং মানুষকে ইসলামের বাণী শোনানো।
বর্তমানে খুলনার সরকারি ব্রজলাল কলেজে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা করছেন। আগামীতেও ইসলামি গান লেখা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিজের সুরে গান গাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তার। ‘মিছে আশা’ গানটি ইউটিউবে ৪৮ লাখের বেশি ভিউ পেয়েছে। তিনি কলরব এবং হ্যাভেন টিউনসহ বিভিন্ন সংগীত প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছেন। তাঁর লেখা গানগুলো আল্লাহ, রাসুল, দেশাত্মবোধ, প্রকৃতি ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রচিত।
শাহারুলের কাজ অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়। আমরা তাঁর ভবিষ্যৎ কাজের আপডেট নিয়ে নিয়মিত তথ্য দিতে থাকব।