শাস্ত্রীয় সঙ্গীত

বিশ্বখ্যাত তবলাবিদ ওস্তাদ জাকির হোসেনের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সঙ্গীত জগৎ। ৭৩ বছর বয়সে সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে ইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়। তার বাবা কিংবদন্তি তবলাবিদ আল্লা রাখা। জাকির হুসেন ১৯৫১ সালের ৯ মার্চ মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা মুম্বাইয়ে কাটে। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি পণ্ডিত রবিশঙ্কর, উস্তাদ আলি আকবর খান, বিসমিল্লাহ খান, পণ্ডিত শান্ত প্রসাদ, এবং পণ্ডিত কিষণ মহারাজদের সাথে মঞ্চে পারফর্ম করেন। তিনি তবলাকে বিশ্বমঞ্চে নতুন পরিচিতি দেন। তার দক্ষতা ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি জ্যাজ, ফিউশন-সহ নানা ধারার সঙ্গীতে সমাদৃত হয়েছিল। ১৮ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তিনি কঠিন সংগ্রামের মুখোমুখি হন। তবলার মর্যাদা বৃদ্ধিতে তার অবদান অসামান্য। তিনি তবলাকে গানের সঙ্গত থেকে স্বাধীন শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর কাজ সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে এবং তাঁকে একাধিক মর্যাদাপূর্ণ সম্মানে ভূষিত করা হয়। ওস্তাদ জাকির হোসেন শুধু তবলা বাদনেই তার জাদু দেখাননি, বরং সাধারণ মানুষের মাঝে তবলাকে এক সাবলীল বাদ্যযন্ত্র হিসেবে নিয়ে গেছেন। তিনি তবলার শাস্ত্রীয় বোল ও বাণীর সংমিশ্রণে বৃষ্টির শব্দ, বাঘ ও হরিণ শিকার, ট্রেন চলাচলের শব্দ, ঘোড়ার চলার শব্দ ও গতি, ইঁদুরের শব্দ, ছোট ও বড় হাতির নানা রকম গতিবিধি, শঙ্খ বা শাঁখের ধ্বনি, শিবের ডমরু, দৈনন্দিন জীবনের নানান রকম ঘটনা, রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলাসহ পশ্চিমা দেশের ব্যান্ড মিউজিক যেমন জ্যাজ, ব্লুজ, ফিউশন ইত্যাদি ভিন্ন ধরনের বিষয়বস্তু উপস্থাপন করতেন। তিনি ঘরানাগত শাস্ত্রীয় অবকাঠামো বজায় রেখে সব ঘরানার বোল বাজাতেন। ওস্তাদ জাকির হোসেনের বাদনশৈলী দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতো এবং তিনি তাল বাদ্যের রাজা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার মৃত্যুতে সারা বিশ্বে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, তবে তার সংগীতের অমর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ওস্তাদ জাকির হোসেনের প্রয়াণে সঙ্গীত জগতে শোক
  • ৭৩ বছর বয়সে মৃত্যু
  • মুম্বইয়ে জন্ম, সান ফ্রান্সিসকোতে মৃত্যু
  • তবলাকে বিশ্বমঞ্চে নতুন পরিচিতি
  • শাস্ত্রীয় ও আধুনিক সঙ্গীতে অবদান