লালমোহন

লালমোহন: ভোলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত লালমোহন, ভোলা জেলার অন্তর্গত একটি ছোট্ট শহর ও উপজেলা। বরিশাল বিভাগের এই উপজেলাটির ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অপরিসীম। ৭ই জানুয়ারী ১৯১৯ সালে লালমোহন থানার কার্যক্রম শুরু হলেও ১৫ই এপ্রিল ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। ১৯৯৮ সালে লালমোহন পৌরসভা গঠিত হয়। ২২°২০′২৯″ উত্তর ৯০°৪৩′৫৫″ পূর্ব অক্ষাংশে অবস্থিত এই শহরের সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড় উচ্চতা ২ মিটার।

ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:

লালমোহন উপজেলার আয়তন ৩৯৬.২৪ বর্গ কিমি। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী উপজেলার জনসংখ্যা ছিল ২৮৩,৮৮৯ জন। লালমোহন শহরের জনসংখ্যা ৩৬,০৬৬ জন, যার মধ্যে পুরুষ ও নারীর অনুপাত প্রায় সমান। উপজেলার প্রধান জলাশয় হল তেঁতুলিয়া, মেঘনা, বেতুয়া ও বোয়ালিয়া নদী এবং দেবনাথের বিল, গতিয়ার খাল, ভুটার খাল ও শাহবাজপুর চ্যানেল।

অর্থনীতি ও শিক্ষা:

লালমোহন উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, মরিচ, গম, মিষ্টি আলু, চীনাবাদাম প্রভৃতি ফসল উৎপাদন করা হয়। মৎস্য চাষও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। শিক্ষার দিক থেকে, উপজেলায় একটি সরকারি কলেজ, দুটি বেসরকারি কলেজ, কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা রয়েছে। শিক্ষার হার ৪০% এর আশেপাশে।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

মুক্তিযুদ্ধের সময় লালমোহন উপজেলায় সরাসরি কোনো বড় যুদ্ধ হয়নি, তবে এখানকার মুক্তিযোদ্ধারা অন্যান্য স্থানে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। উপজেলার কিছু প্রাচীন নিদর্শনও রয়েছে যেমন আঃ রহমান তহসিলদারের বিল্ডিং (মুন্সি বাড়ি), বিজয় বাবুর বাড়ির মন্দির।

সংস্কৃতি ও পর্যটন:

লালমোহন স্টেডিয়াম শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানে বিভিন্ন খেলাধুলা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

সামগ্রিকভাবে, লালমোহন একটি প্রকৃতির কোলে অবস্থিত শান্ত ও সুন্দর উপজেলা যার ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক গুরুত্ব রয়েছে। উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও উন্নত ও সমৃদ্ধশালী হতে সাহায্য করবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • লালমোহন ভোলা জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা
  • ১৯১৯ সালে থানা, ১৯৮৩ সালে উপজেলা ও ১৯৯৮ সালে পৌরসভা গঠিত
  • জনসংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ
  • কৃষি নির্ভর অর্থনীতি
  • মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ হয়নি, তবে মুক্তিযোদ্ধারা অংশগ্রহণ করেছিলেন