রোকেয়া হল

রোকেয়া হল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী ছাত্রাবাসের ইতিহাস ও গুরুত্ব

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমূল্য সম্পদ রোকেয়া হল, নারী শিক্ষার প্রসার ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে গভীরভাবে জড়িত একটি প্রতিষ্ঠান। ১৯৩৮ সালে মাত্র ১২ জন নারী শিক্ষার্থী নিয়ে 'চামেলি হাউজ' নামে যাত্রা শুরু করে এই হল। ১৯৬৪ সালে বাংলা সাহিত্যের অনন্য প্রতিভাবান বেগম রোকেয়ার নামে এর নামকরণ করা হয়। বেগম রোকেয়া নারী জাগরণের এক অগ্রদূত ছিলেন, এবং তার নামানুসারে এই হলের নামকরণ নারী শিক্ষার প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিশ্রুতির প্রতীক।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে রোকেয়া হলের ছাত্রীরা পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হন। তবুও তারা সাহস ও অদম্যতার সাথে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নেও রোকেয়া হলের ছাত্রীরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে।

বর্তমানে রোকেয়া হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় নারী ছাত্রাবাস। এটিতে ৪টি ভবন রয়েছে: শাপলা (প্রধান), চামেলি (নতুন), অপরাজিতা (বর্ধিত) এবং ৭ মার্চ ভবন। স্নাতকোত্তর ও এমফিল ছাত্রীদের জন্য রয়েছে ফয়জুন্নেসা ভবন। হলে প্রায় ২৭০০ ছাত্রী আবাসিক হিসেবে থাকে এবং প্রায় ৭০০০ ছাত্রী এর সাথে সংযুক্ত। ২০০৮ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০৮ আসন বিশিষ্ট ৭ মার্চ ভবনের উদ্বোধন করেন।

রোকেয়া হল শুধুমাত্র একটি আবাসিক হল নয়, এটি নারী শিক্ষা ও মুক্তির ইতিহাসের একটি স্মারক। প্রতিবছর মেধাবী ছাত্রীদের 'রোকেয়া স্বর্ণপদক' প্রদান করা হয়। বর্তমানে অধ্যাপিকা ড. জিন্নাত হুদা রোকেয়া হলের প্রভোস্ট। হলের অভ্যন্তরে রয়েছে প্রভোস্ট বাংলো, আবাসিক শিক্ষিকাদের বাসভবন এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। এই হলের ইতিহাস ও ভবিষ্যৎ উভয়ই নারী শিক্ষা ও বাংলাদেশের উন্নয়নের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।

মূল তথ্যাবলী:

  • রোকেয়া হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী ছাত্রাবাস।
  • ১৯৩৮ সালে 'চামেলি হাউজ' নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • ১৯৬৪ সালে বেগম রোকেয়ার নামে নামকরণ করা হয়।
  • মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্তম নারী ছাত্রাবাস।
  • মেধাবী ছাত্রীদের 'রোকেয়া স্বর্ণপদক' প্রদান করা হয়।