রিয়াদ: সৌদি আরবের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর
রিয়াদ (ইংরেজী: Riyadh, আরবি: الرياض) সৌদি আরবের রাজধানী এবং দেশটির বৃহত্তম শহর। ‘বাগান’ (The Gardens) অর্থের এই শহরটি নাজদ অঞ্চলের আর-রিয়াদ প্রদেশের অন্তর্গত এবং আরব উপদ্বীপের মধ্যভাগে অবস্থিত। প্রায় ৭০ লক্ষেরও বেশি জনসংখ্যা নিয়ে এটি আরব উপদ্বীপের সবচেয়ে জনবহুল শহর। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত রিয়াদ, ঐতিহাসিক ও আধুনিক স্থাপত্যের মিশ্রণে এক অসাধারণ শহর।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
রিয়াদের ইতিহাস খুবই সমৃদ্ধ। একসময় এটি হাজর আল-ইয়ামামাহ নামে পরিচিত ছিল। ১৯০২ সালে আব্দুল আজিজ ইবনে সৌদ রিয়াদের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং ধীরে ধীরে এই অঞ্চল জুড়ে তার আধিপত্য বিস্তার করেন। ১৯৩২ সালে সৌদি আরব রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর রিয়াদ এর রাজধানী হিসেবে নির্বাচিত হয়। মসমাখ দুর্গ রিয়াদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। এই দুর্গ ১৮৬৫ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং ১৯০২ সালে আব্দুল আজিজ ইবনে সৌদ এর দখলে আসে, যা সৌদি ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তুর্কি ইবনে আব্দুল্লাহও রিয়াদকে দ্বিতীয় সৌদ রাজ্যের রাজধানী হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।
ভৌগোলিক অবস্থান ও আবহাওয়া:
রিয়াদ মরুভূমির মধ্যে অবস্থিত হলেও এখানকার আবহাওয়া মহাদেশীয়। গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসেরও বেশি হতে পারে, আবার শীতকালে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে যেতে পারে। বৃষ্টিপাত কম।
অর্থনীতি ও উন্নয়ন:
রিয়াদ সৌদি আরবের অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু। অনেক ব্যাংক, প্রধান কোম্পানি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর রিয়াদে অবস্থিত। কিং আব্দুল্লাহ ফাইন্যান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্ট বিশ্বের বৃহৎ আর্থিক কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি। রিয়াদ তীব্র গতিতে উন্নয়নশীল একটি মহানগরী, যেখানে আধুনিক স্থাপত্য এবং অবকাঠামো দেখা যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা এবং আবাসিক ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে।
দর্শনীয় স্থান:
রিয়াদে দর্শনার্থীদের দেখার জন্য অনেক দর্শনীয় স্থান আছে। মসমাখ দুর্গ, মুরাব্বা প্রাসাদ, কিং খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কিংডম সেন্টার, আল ফাইসালিয়া সেন্টার, দিরিয়া (UNESCO বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান) এবং রিয়াদ মেট্রো সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান থাকে।
ভবিষ্যৎ:
সৌদি ভিশন ২০৩০ এর অন্তর্ভুক্ত রিয়াদ আরও উন্নত এবং আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে উঠবে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এটি বিশ্বের অগ্রণী শহরগুলির মধ্যে একটি হিসেবে পরিগণিত হবে।