রাষ্ট্রীয় মর্যাদা একটি বহুমুখী ধারণা যা বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করে। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা সাধারণত দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য। এটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান, বিদেশী অতিথিদের অভ্যর্থনা এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমে তাদের আমন্ত্রণ ও আসন ব্যবস্থার জন্য প্রযোজ্য প্রোটোকলের অংশ। এই মর্যাদা বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গমনাগমনে, প্রোটোকল অনুসারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদের ধারকগণ এই রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ভোগ করেন।
তবে, এই মর্যাদা সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট তালিকা বা সংজ্ঞা উল্লেখ করা হয়নি। যদিও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সরকারীভাবে বিভিন্ন পদের গুরুত্ব ভিত্তিতে ক্রমবিন্যাস করে একটি তালিকা প্রকাশ করে, তবুও এটি চূড়ান্ত নয়। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট এ সংক্রান্ত একটি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রদান করেছে যা বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছে তবে ২০২০ সালের সংশোধনীতে কিছু অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের ব্যাখ্যাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় মর্যাদার একটি আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডলও উঠে আসে। বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরীর মতে, ‘রাষ্ট্রীয় মর্যাদা বলে কিছু নেই, মর্যাদার মালিক একমাত্র আল্লাহ।’ তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জানাজায় এই মন্তব্য করেন। তার মৃত্যুর সময় তার পরিবার এবং অন্যান্য সহযোগীদের প্রতি যে সম্মান প্রকাশিত হয়, তার উপর জোর দিয়ে তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদার অপেক্ষা মানবিক মর্যাদার গুরুত্ব উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ২০০৪ সালে বঙ্গভবন থেকে বের হয়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর একটি বক্তব্য উল্লেখ করেন, যেখানে তিনি ক্ষমতার অস্থায়িত্ব এবং আল্লাহর দান হিসেবে ইজ্জতের গুরুত্ব উল্লেখ করেন।
সুতরাং, রাষ্ট্রীয় মর্যাদার ধারণাটি ব্যাপক ও বহুমুখী। এর সংজ্ঞা ও প্রয়োগ প্রেক্ষাপেক্ষ ভেদে ভিন্ন হতে পারে। অধিক তথ্য প্রাপ্তির সাপেক্ষে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানানো যাবে।