ম্যানেজমেন্ট বা ব্যবস্থাপনা (Management) হলো একটি সার্বজনীন সামাজিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে এক বা একাধিক ব্যক্তি, গোষ্ঠী, বা প্রতিষ্ঠান কোনও নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে নিয়োজিত মানবীয় ও বস্তুগত সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করে। এটি পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মী নিয়োগ, নির্দেশনা এবং নিয়ন্ত্রণের ধারাবাহিক প্রয়োগের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে। 'ম্যানেজমেন্ট' শব্দটি ল্যাটিন 'manus' (হাত) এবং 'agere' (কাজ করা) থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ 'হাতে নেওয়া' বা 'পরিচালনা করা'।
ঐতিহাসিক দিক: প্রাচীন সভ্যতায়ও ব্যবস্থাপনার ধারণা বিদ্যমান ছিল, যেমন- প্রাচীন চীনের কেন্দ্রীভূত ব্যুরোক্রেটিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও সুমেরীয় ব্যবসায়ীদের কার্যকলাপ। অষ্টাদশ ও উনিশ শতকে শিল্প বিপ্লবের সাথে ব্যবস্থাপনার ধারণা আরও বিকশিত হয়। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের বৃদ্ধি ও জটিলতা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে মালিকদের থেকে স্বতন্ত্রভাবে ব্যবস্থাপকদের একটি শ্রেণী গড়ে উঠতে থাকে।
বিভিন্ন তত্ত্ব: হেনরি ফেয়ল (১৮৪১-১৯২৫) আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হিসাবে পরিচিত, যিনি ১৪টি মূল নীতির মাধ্যমে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার ধারণা প্রবর্তন করেন। ফ্রেডরিক উইন্সলো টেলর (১৮৫৬-১৯১৫) ‘বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা’র জনক। মেরি পার্কার ফোলেট (১৮৬৮-১৯৩৩) ‘মানব সম্পর্ক’ ভিত্তিক ব্যবস্থাপনার ধারণা প্রদান করেন। এছাড়াও, বিংশ শতাব্দীতে বিভিন্ন লেখক, যেমন এল্টন মেয়ো, চেস্টার বার্নার্ড, প্রভৃতি ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা ও তত্ত্ব প্রদান করেছেন।
ব্যবস্থাপনার স্তর: ব্যবস্থাপনার সাধারণত তিনটি স্তর থাকে: উচ্চ স্তর, মধ্য স্তর এবং নিম্ন স্তর। প্রতিটি স্তরের দায়িত্ব ও কর্তব্য ভিন্ন।
ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী: ব্যবস্থাপনার মূল কার্যাবলী হলো পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মী নিয়োগ, নির্দেশনা, নেতৃত্ব প্রদান, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ।
ব্যবস্থাপনার প্রকারভেদ: ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যেমন- উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, বিপণন ব্যবস্থাপনা, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা, অফিস ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার নীতি ও কৌশল ভিন্ন হতে পারে।
যদি আরও তথ্যের প্রয়োজন হয়, আমরা আপনাকে পরবর্তীতে আপডেট করব।