গাজা যুদ্ধ ও মোয়াযায ওবাইয়াতের অভিজ্ঞতা:
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর অত্যাচারের বর্ণনামূলক এক চিত্রের অংশ হলেন মোয়াযায ওবাইয়াত। একজন সাবেক বডিবিল্ডার, ৩৭ বছর বয়সী মোয়াযায পাঁচ সন্তানের জনক। ইসরায়েলি বাহিনীর হেফাজতে নয় মাস কাটানোর পর গত জুলাই মাসে মুক্তি পান তিনি। কিন্তু মুক্তির মাত্র তিন মাস পরই অক্টোবর মাসে আবারও ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হন তিনি।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বেথলেহেম সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে মোয়াযাযের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD) এর লক্ষণ পাওয়া গেছে। চিকিৎসা রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলি হাজতে তিনি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। পরিবার থেকে দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন থাকা, চারপাশের ভয়াবহ পরিস্থিতি, এবং তীব্র মানসিক উদ্বেগ তার অসুস্থতাকে আরও জটিল করে তুলেছে।
মোয়াযায ওবাইয়াতের ঘটনা গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি বন্দিশালায় ফিলিস্তিনীদের উপর চালানো নির্যাতনের এক বাস্তব দৃষ্টান্ত। রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গাজা যুদ্ধের সময় এমন অনেক ফিলিস্তিনি আটক হয়েছেন যাদের কোন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ছাড়াই অবৈধ সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততার অজুহাতে আটকে রাখা হচ্ছে। তাদের অনেককে শারীরিক নির্যাতন, অনাহারে রাখা ও ঘুমাতে না দেওয়ার মতো অমানবিক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনেও ইসরায়েলি বন্দিশালায় ফিলিস্তিনীদের উপর মারধর, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ইসরায়েলি বাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও কিছু ঘটনার তদন্তের কথা বলেছে। এই প্রতিবেদনে ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলাকেও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ওয়াশিংটনও এই প্রতিবেদনের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
মোয়াযায ওবাইয়াতের গল্প গাজা যুদ্ধের কঠোর বাস্তবতা এবং বন্দিদের ভোগান্তিক অভিজ্ঞতার এক ভয়াবহ উদাহরণ। এই বাস্তবতার ব্যাপারে বিশ্ববাসীকে সচেতন থাকা উচিত। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে আরো তথ্য উপলব্ধ হলে এই নিবন্ধটি আরো সমৃদ্ধ করা সম্ভব হবে।