মেক্সিকো: উত্তর আমেরিকার একটি প্রাণোদ্দীপক দেশ
মেক্সিকো, আনুষ্ঠানিক নামে মেক্সিকান যুক্তরাষ্ট্র (Estados Unidos Mexicanos), উত্তর আমেরিকার একটি ঐতিহ্যবাহী ও বহুবিধ সংস্কৃতির দেশ। প্রায় দুই মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটির উত্তরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পূর্বে মেক্সিকো উপসাগর, দক্ষিণে গুয়াতেমালা ও বেলিজ এবং পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর অবস্থিত। প্রায় ১৩ কোটি জনসংখ্যা নিয়ে এটি বিশ্বের জনবহুল দেশগুলির মধ্যে অন্যতম।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
মেক্সিকোর ইতিহাস প্রাক-কলম্বিয়ান সভ্যতা দিয়ে সমৃদ্ধ। ওলমেক, মায়া, আজটেক সভ্যতা এই অঞ্চলের ভূমিকে সভ্যতার আলোতে জ্বালিয়ে তুলেছিল। ১৫২১ সালে স্পেনের আগমনের পর নিউ স্পেন উপনিবেশ হিসেবে শাসিত হয় এই অঞ্চল। ১৮১০ সালে শুরু হওয়া স্বাধীনতা সংগ্রামের পর ১৮২১ সালে মেক্সিকো স্বাধীনতা অর্জন করে। এরপর অর্থনৈতিক অস্থিরতা, গৃহযুদ্ধ এবং বৈদেশিক হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে যায় এই দেশ। ১৯১০ সালের মেক্সিকান বিপ্লবের ফলে বর্তমান সংবিধান প্রণয়ন হয়।
ভৌগোলিক বিচিত্রতা:
মেক্সিকোর ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত বিচিত্র। এখানে উঁচু পর্বতমালা, বিশাল মরুভূমি, সুন্দর উপকূলীয় অঞ্চল এবং সবুজ জঙ্গল দেখা যায়। মেক্সিকো সিটি, গুয়াদালাজারা, মন্টের্রে ইত্যাদি বৃহৎ শহর এই দেশের অর্থনৈতিক কেন্দ্র।
অর্থনীতি:
মেক্সিকো একটি উদীয়মান অর্থনীতি সম্পন্ন দেশ। নাফটা (NAFTA)-র মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার সঙ্গে গভীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান। পর্যটন, তৈরি পণ্য উৎপাদন এবং খনিজ সম্পদের উত্তোলন এই দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ।
সংস্কৃতি:
মেক্সিকোর সংস্কৃতি ইউরোপীয়, আদিবাসী এবং আফ্রিকান সংস্কৃতির মিশ্রণ। তাদের ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত, নৃত্য, খাবার বিশ্ব খ্যাত। দেশটির কিছু জনপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী উৎসব হল দিয়া দে মুয়ের্তোস (Día de Muertos) এবং সিনকো দে মায়ো (Cinco de Mayo)।
সমস্যা:
মেক্সিকো এখনো অনেক সমস্যার সম্মুখীন। দারিদ্র্য, অসমতা, ড্রাগ সংক্রান্ত হিংসা এবং ভ্রষ্টাচার দেশটির বৃহৎ প্রতিবন্ধকতা।
উপসংহার:
মেক্সিকো একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ, ভৌগোলিক ভাবে বিচিত্র এবং সংস্কৃতির দিক থেকে সমৃদ্ধ দেশ। তাদের অর্থনীতি উন্নয়নশীল হলেও অনেক সমস্যার সম্মুখীন। ভবিষ্যতে এই দেশটির আরও উন্নতির জন্য এই সমস্যাগুলির সমাধান অত্যন্ত জরুরি।