মুড়ি: বাঙালির প্রিয় খাবার
ধান থেকে তৈরি মুড়ি বাংলাদেশ ও ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার। এটি একটি স্ফীত চাল যা প্রাতঃরাশ, জলখাবার, অথবা অন্যান্য খাবারের সাথে খাওয়া হয়। ঐতিহ্যগতভাবে গরম বালিতে চাল ভাজার মাধ্যমে মুড়ি তৈরি করা হলেও, বর্তমানে উচ্চ চাপ ও বাষ্প ব্যবহার করেও এটি তৈরি করা হয়। মুড়ির সহজলভ্যতা ও পুষ্টিগুণ এটিকে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জনপ্রিয় খাবার করে তুলেছে।
বাংলাদেশে মুড়ি একটি নিত্যদিনের খাদ্যের অংশ। ছোলা ভাজি, ঝাল মুড়ি, এবং বিভিন্ন ধরণের চাটের মূল উপাদান হিসেবে মুড়ির ব্যবহার ব্যাপক। এটি শুকনো খাবার হিসেবে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়, যার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এটি খাদ্য সাহায্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলেও মুড়ি বিভিন্ন নামে পরিচিত এবং খাদ্য সংস্কৃতিতে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। দক্ষিণ ভারতের কেরালা ও তামিলনাড়ুতে হিন্দু দেবদেবীর উদ্দেশ্যে পূজায় মুড়ি অর্পণ করা হয়।
মুড়ির পুষ্টিগুণ: প্রতি ১০০ গ্রাম মুড়িতে প্রায় ৪০২ ক্যালরি, ০.৫ গ্রাম চর্বি, ৮৯.৮ গ্রাম শর্করা, এবং ৬.৩ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এছাড়াও এতে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়ামের উপস্থিতি থাকে।
ঝাল মুড়ি: বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুড়ির প্রকরণ হল ঝাল মুড়ি। এটি মুড়ি, চানাচুর, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, লেবুর রস, বীট লবণ ও অন্যান্য মসলার মিশ্রণে তৈরি করা হয়। অন্যান্য উপকরণ যেমন মাংসের ঝোল, টমেটো, শসা, কাসুন্দি ইত্যাদিও ব্যবহার করা হয়।
ঐতিহাসিক দিক:
মুড়ির ঐতিহাসিক উৎপত্তি সুনির্দিষ্টভাবে জানা না গেলেও, চাল প্রক্রিয়াজাতকরণের ঐতিহ্যের সাথে জড়িত। প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্ফীত চাল তৈরির প্রচলন ছিল। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুড়ির প্রস্তুতি এবং ব্যবহারের বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতি প্রজন্ম ধরে চলে আসছে।
আধুনিক উৎপাদন:
বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ব্যাপক পরিমাণে মুড়ি উৎপাদন করা হয়। এই উৎপাদন প্রক্রিয়া ঐতিহ্যগত পদ্ধতির চেয়ে বেশ সহজ এবং দ্রুততর।