মিশর: নীল নদের উপত্যকার সভ্যতা ও আধুনিক রাষ্ট্র
আফ্রিকার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত মিশর, একটি আন্তঃমহাদেশীয় রাষ্ট্র যা এশিয়ার স্পর্শেও রয়েছে। প্রাচীন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতার জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত এই দেশটি আধুনিক যুগেও তার গুরুত্ব বজায় রেখেছে। নীল নদের উপত্যকা, পিরামিড, স্ফিংক্স, এবং প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভের সমাহারে ভরা মিশর পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
- *ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূপ্রকৃতি:**
মিশরের উত্তরে ভূমধ্যসাগর, পূর্বে লোহিত সাগর এবং আকাবা উপসাগর, পশ্চিমে লিবিয়া এবং দক্ষিণে সুদান অবস্থিত। নীল নদ দেশটির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভূমধ্যসাগরে মিশেছে। এই নদীর উপত্যকা উর্বর কৃষিভূমি, যা মিশরের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের বেশিরভাগ অঞ্চল মরুভূমি। সিনাই উপদ্বীপও মিশরের অন্তর্ভুক্ত।
- *জনসংখ্যা ও জাতিগোষ্ঠী:**
প্রায় ১০ কোটি জনসংখ্যার এই দেশটি উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে জনবহুল রাষ্ট্র। জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই আরব, তবে নুবীয়, ভারতীয়, আর্মেনীয়, এবং গ্রিক জাতিগোষ্ঠীর লোকজনও বাস করে।
- *ধর্ম ও ভাষা:**
ইসলাম মিশরের রাষ্ট্রধর্ম, এবং জনসংখ্যার ৯০% মুসলিম। কপ্টীয় খ্রিস্টানরাও গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। আরবি মিশরের সরকারী ভাষা। ইংরেজি ও ফরাসি ভাষাও প্রচলিত।
- *অর্থনীতি:**
মিশরের অর্থনীতি কৃষি, খনন ও শিল্পোৎপাদনের উপর নির্ভরশীল। তুলা, ধান, প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল এবং সোনা গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদন। সুয়েজ খাল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। পর্যটন খাতও অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
- *ঐতিহাসিক ঘটনা:**
প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন ও দীর্ঘস্থায়ী সভ্যতার মধ্যে অন্যতম। পিরামিড, স্ফিংক্স, হায়ারোগ্লিফ লেখা ইত্যাদি প্রাচীন মিশরের উন্নততার পরিচায়ক। গ্রীক, রোমান, আরব, তুর্কি ও ব্রিটিশ শাসনামলের পর ১৯৫২ সালে মিশর স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। আরব লিগের প্রতিষ্ঠা, সুয়েজ খাল সংক্রান্ত সংঘর্ষ, ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধ ও শান্তিচুক্তি,
আরব বসন্ত
এইসব ঐতিহাসিক ঘটনা মিশরের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ধারণ করেছে।
- *গুরুত্বপূর্ণ স্থান:**
কায়রো (রাজধানী), আলেকজান্দ্রিয়া, গিজা (পিরামিড ও স্ফিংক্স), সুয়েজ খাল।
- *গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি:**
মোহাম্মদ আলী, জামাল আবদেল নাসের, আনোয়ার সাদাত, হোসনি মুবারক, আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি।