দিনাজপুরে সার বিতরণে দুর্নীতির অভিযোগে বিএডিসি কর্মকর্তা শওকত আলী বদলি
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) দিনাজপুর অঞ্চলের যুগ্ম পরিচালক (সার) শওকত আলীর বিরুদ্ধে ঘুষ ছাড়া ডিলারদের নামে সার বরাদ্দ না দেওয়া, ডিলারদের হয়রানি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে রাজশাহীতে বদলি করা হয়েছে।
অভিযোগের বিস্তারিত:
বিএডিসি বীজ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মির্জা লিয়াকত আলী বেগসহ অনেক সার ডিলারের অভিযোগ, শওকত আলী তাঁদের নানাভাবে হয়রানি করেন। সার উত্তোলনের জন্য ডিও লেটারে স্বাক্ষরের নামে উৎকোচ আদায় করেন। কাছের গুদামে সার থাকা সত্ত্বেও দূরের গুদাম থেকে সার বরাদ্দ দিয়ে পরিবহন খরচ বাড়িয়ে দেন। উৎকোচ না দিলে চাহিদামতো সারও দেন না।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, তিউনেশিয়া টিএসপি সারের প্রতি বস্তার জন্য ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চায়না ডিএপি সারে ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং কানাডা এমওপি সারের জন্য ২০ টাকা করে উৎকোচ নেন শওকত আলী। গুদামে সার ঢোকানো ও বের করার সময় শ্রমিকদের বিল থেকেও উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সিজন শেষে সার পুনর্গণনার সময় ভুয়া কোটেশন ও বিল তৈরি করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে।
শুধু ডিলারদের নয়, শওকত আলীর অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও হয়রানি ও অশোভন আচরণের অভিযোগ রয়েছে। বহিরাগতদের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে।
শওকত আলীর পাল্টা অভিযোগ:
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শওকত আলী জানিয়েছেন, তিনি কোনও উৎকোচ নেননি এবং ডিলারদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কঠোর আচরণের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি জানান, তিন জেলার সারের সরবরাহ ঠিক রাখা ও অফিসের স্বার্থে তিনি কঠোর ভাষায় কথা বলে থাকেন।
বিএডিসির প্রতিক্রিয়া:
ঘুষ ছাড়া সার না দেওয়া ও অনিয়মের অভিযোগ উঠার পর শওকত আলীকে দিনাজপুর থেকে রাজশাহী বিএডিসিতে বদলি করা হয়েছে। অভিযোগকারী মির্জা লিয়াকত আলী বেগ দাবি করেছেন, শওকত আলীকে শুধু বদলি করলে হবে না, তার দুর্নীতির বিচার করতে হবে।