মাহবুব উল আলম চৌধুরী

আপডেট: ৫ জানুয়ারী ২০২৫, ৬:০৫ এএম
নামান্তরে:
Mahbub Ul Alam Choudhury
মাহবুব উল আলম চৌধুরী

মাহবুব উল আলম চৌধুরী (৭ নভেম্বর ১৯২৭ - ২৩ ডিসেম্বর ২০০৭): একুশের প্রথম কবিতার কবি

মাহবুব উল আলম চৌধুরী বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট কবি, সাংবাদিক এবং ভাষা সৈনিক ছিলেন। তিনি তার 'কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি' কবিতার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। এই কবিতাটি ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পুলিশের গুলিতে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে রচিত হয় এবং ভাষা আন্দোলনে রচিত প্রথম কবিতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে ৭ নভেম্বর, ১৯২৭ সালে তার জন্ম। পিতা আহমদুর রহমান চৌধুরী এবং মাতা রওশন আরা বেগম। ১৯৪৭ সালে গহিরা হাইস্কুল থেকে বৃত্তিসহ প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে লেখাপড়া অসমাপ্ত রেখেই কলেজ ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড:

ছাত্র জীবনেই রাজনীতিতে যোগদান করেন। ১৯৪২ সালে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ব্রিটিশবিরোধী ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৪৭ সালে তাঁর সম্পাদনায় 'সীমান্ত' নামে একটি প্রগতিশীল মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়, যা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়। ভাষা আন্দোলন (১৯৪৮-১৯৫৬), গণতন্ত্রী দল, যুক্তফ্রন্ট এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সাথে তিনি সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, যেমন প্রান্তিক নব নাট্যসংঘ এবং কৃষ্টি কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক 'স্বাধীনতা' পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

সম্মাননা ও পুরষ্কার:

তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমী ফেলোশিপ (১৯৮৬), বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্তৃক সংবর্ধনা এবং ২০০৯ সালে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন।

মৃত্যু:

২০০৭ সালের ২৩শে ডিসেম্বর ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি মারা যান এবং বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতা 'কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি' রচনা করেন।
  • চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরায় জন্মগ্রহণ করেন।
  • ভাষা আন্দোলন, গণতন্ত্রী দল, যুক্তফ্রন্ট এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
  • ‘সীমান্ত’ নামক প্রগতিশীল মাসিক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
  • মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।