মাদ্রাসা শিক্ষক: অবদান, প্রশিক্ষণ ও বর্তমান চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় মাদ্রাসা শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম। তারাই জাতির ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগর। তাদের প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান, বদলি এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে একটি বিশ্লেষণমূলক লেখা উপস্থাপন করা হলো।
প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন:
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মাদ্রাসা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৯৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর গাজীপুরের বোর্ড বাজারে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইনস্টিটিউটটি বিভিন্ন স্তরের (ইবতেদায়ী, দাখিল, আলিম) বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করে। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ইনস্টিটিউটটি প্রায় ১২৫০০ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এছাড়াও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। উল্লেখ্য, আগামী ০৩ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে ইবতেদায়ী, দাখিল এবং প্রভাষক/সহকারী অধ্যাপকদের জন্য বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু হবে।
কর্মসংস্থান ও বদলি:
বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষকদের নিয়োগ ও বদলি সংক্রান্ত নীতিমালা রয়েছে। এনটিআরসিএ'র সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা কর্মজীবনে দুইবার (পুরুষ) এবং তিনবার (মহিলা) কর্মস্থল পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন। বদলির আবেদন প্রতিবছর ১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে করা যায়। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বদলির আদেশ জারি হয় এবং ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হয়।
চ্যালেঞ্জ:
মাদ্রাসা শিক্ষকদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে। যেমন:
- পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ এবং সুযোগ-সুবিধার অভাব
- বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য কর্মসুবিধার অসুবিধা
- কর্মস্থল বদলির জটিলতা
- আধুনিক প্রযুক্তির সীমিত ব্যবহার
- নতুন শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যক্রমের সাথে তাল মেলাতে সমস্যা
সমাধান:
এই চ্যালেঞ্জগুলো দূর করার জন্য জরুরি কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। যেমন:
- প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর উন্নয়ন
- বেতন-ভাতা এবং কর্মসুবিধার উন্নয়ন
- বদলি প্রক্রিয়ার সরলীকরণ
- আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি
- নতুন শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যক্রমের সাথে তাল মেলাতে শিক্ষকদের সহযোগিতা
উপসংহার:
মাদ্রাসা শিক্ষকরা বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের অবদান স্বীকার করে তাদের জন্য আরও ভালো প্রশিক্ষণ, বেতন এবং কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা অপরিহার্য। এটি জাতীয় উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।