মাওলানা মাহফুজুল হক: একজন প্রভাবশালী দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত ও রাজনীতিবিদ
মাওলানা মুহাম্মদ মাহফুজুল হক (জন্ম: নভেম্বর ১৯৬৯) একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও ধর্মীয় বক্তা। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের গভর্নর, আঞ্চলিক কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ইত্তেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া মুহাম্মদপুরের সভাপতি এবং মাসিক রহমানী পয়গামের তত্ত্বাবধায়ক। তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া, ঢাকার মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন। আইন অনুসারে, তিনি আল হাইআতুল উলয়ার স্থায়ী কমিটির সদস্য।
তার পিতা আজিজুল হক ছিলেন বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত ইসলামি পণ্ডিত ও সহিহ বুখারীর প্রথম বাংলা অনুবাদক, যিনি শায়খুল হাদিস নামে সমাধিক পরিচিত। মামুনুল হক তার অনুজ, একজন প্রভাবশালী ইসলামি বক্তা ও রাজনীতিবিদ।
তার প্রাথমিক শিক্ষা তার পিতার কাছে। পরবর্তীতে তিনি আজিমপুর চাঁন-তারা মসজিদ সংলগ্ন হেফজ মাদ্রাসায় ভর্তি হন এবং ১১ বছর বয়সে কুরআনের হেফজ সম্পন্ন করেন। এরপর জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগে কিতাব বিভাগে অধ্যয়ন করেন। ১৯৮৪ সালে এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য গ্রেফতার হন। তিনি জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন এবং ১৯৯২ সালে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে দ্বিতীয়বার দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) অধ্যয়ন করেন।
১৯৯৩ সালে জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ায় শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবনের সূচনা। পরবর্তীতে তিনি জামিয়ার “ইসলামি আইন ও গবেষণা” বিভাগে অধ্যয়ন করে মুফতি সনদ লাভ করেন। ২০০০ সালে আজিজুল হক জামিয়া হাকিকিয়া নামে একটি মাদ্রাসার কার্যক্রম চালু করলে তিনি এর পরিচালক নিযুক্ত হন। ২০০১ সালে জামিয়া রাহমানিয়ার সহকারী পরিচালক ও ২০০২ সালে মহাপরিচালক হন। ২০০৫ সালে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব এবং ২০২০ সালের ৩ অক্টোবর মহাসচিব নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন এবং ২০০৫ সালে মজলিসে শুরার সদস্য, ২০১২ সালে সহ-সভাপতি এবং ২০১৩ সালে মহাসচিব হন। ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর খেলাফতের মহাসচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি ইত্তেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া মুহাম্মদপুরের সভাপতি এবং মাসিক রহমানী পয়গামের তত্ত্বাবধায়ক। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর নির্বাচিত হন।
তার পারিবারিক জীবনে তিনি তিন মেয়ে ও এক ছেলের জনক এবং পরিবারের সবাই কুরআনের হাফেজ। ২০২০ সালের এপ্রিলে সময় টিভির একটি ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় তিনি সমালোচনার শিকার হন এবং যমুনা টিভির পিতার বিরুদ্ধে আপত্তিকর প্রচারের ঘটনায় তিনি টিভি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এই তথ্যের ভিত্তিতে মাওলানা মাহফুজুল হক সম্পর্কে একটি বিস্তারিত লেখা তৈরি করা হয়েছে। আরো তথ্য পাওয়া গেলে লেখাটি আপডেট করা হবে।