বাংলাদেশের মনজুর হোসেনগণ: একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বর্ণনা
বাংলাদেশে ‘মনজুর হোসেন’ নামে একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই লেখাটি তাদের মধ্যে দুজনের বিস্তারিত তথ্য দিচ্ছে যাতে বোঝাপড়ার সুবিধা হয়।
প্রথম মনজুর হোসেন: একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও গবেষক
প্রফেসর ড. এম. মনজুর হোসেন বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও গবেষক। বাংলাদেশে স্ট্রবেরি চাষের উদ্ভাবক হিসেবে তিনি বেশি পরিচিত। তিনি সোমা ক্লোনাল ভেরিয়েশন প্রযুক্তির সাহায্যে বাংলাদেশে চাষ উপযোগী করে রাবি-১, রাবি-২, রাবি-৩ নামে তিনটি জাত উদ্ভাবন করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্স (আইবিএসসি) এর বর্তমান পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন।
১৯৫৭ সালের ১৫ জানুয়ারি নাটোরের সিংড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার স্ত্রী মোসাঃ নাসিমা ইয়াসমিন চৌধুরী রাজশাহী কলেজ এর প্রাণিবিদ্যা বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক। তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক। ১৯৮৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন।
তার গবেষণা কর্মের মধ্যে বাংলাদেশে চাষ উপযোগী স্ট্রবেরীর জাত উদ্ভবন সবচাইতে বেশি উল্লেখযোগ্য। ২০০৭ সালে দেশে প্রথম টকটকে লাল রঙের স্ট্রবেরি চাষের উদ্ভাবন করেন। তিনি রাবি-১, রাবি-২ ও রাবি-৩ নামে স্ট্রবেরির জাত আবিষ্কার করে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেন। ১৯৯৬ সালে দেশে প্রথম টিস্যু কালচারের মাধ্যমে আলুবীজ উৎপাদন করেন। রাজশাহীর পদ্মা আবাসিক এলাকায় রেইনবো টিস্যু কালচার নামে ল্যাব স্থাপন করে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে রোগমুক্ত আলুবীজ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করেন। ২০১৫ সালে মাত্র ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী নগরের নামোভদ্রা এলাকায় ৩০০ টন ধারণক্ষমতার হিমাগার তৈরি করেন। টোকাইদের পড়াশোনার জন্য ১৯৯৬ সালে রাজশাহী নগরীর দেওয়ানপাড়ায় আলো আশা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মহাত্মা গান্ধী শামীত্ম পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেছেন।
দ্বিতীয় মনজুর হোসেন: বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা
এই মনজুর হোসেন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা। তিনি বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের রেক্টর (সচিব) ছিলেন। বর্তমানে তিনি সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন (যদিও লেখা অনুযায়ী, তাকে ওএসডি করা হয়েছে)। ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীকালে তিনি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর থেকে লোকপ্রশাসন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১০ম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২১ সালের মে মাসে সচিব পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি সেতু বিভাগে যোগদান করেন।
এক নজরে:
- উভয় মনজুর হোসেনই বাংলাদেশের নাগরিক।
- প্রথম মনজুর হোসেন গবেষক, দ্বিতীয় জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
- তাদের পেশা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অর্জন ও কর্মক্ষেত্র ভিন্ন।