ভিটামিন সি, যা রাসায়নিকভাবে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড (Ascorbic Acid) নামে পরিচিত, একটি জলে দ্রবণীয় ভিটামিন। এটি মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান, যা প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন ফল ও শাকসবজিতে পাওয়া যায়। শরীরে কোলাজেন তন্তু তৈরিতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
ভিটামিন সি এর আবিষ্কারের ইতিহাস:
১৯১২ সালে ভিটামিন সি আবিষ্কৃত হয় এবং ১৯৩৩ সালে এটিকে প্রথম রাসায়নিকভাবে উৎপাদন করা হয়। এই আবিষ্কারে বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট সেন্ট জিয়র্গির অবদান অনন্য, যার জন্য তিনি ১৯৩৭ সালে ফিজিওলজি ও মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার পান।
ভিটামিন সি-এর অভাবজনিত সমস্যা:
ভিটামিন সি-এর অভাব দীর্ঘদিন ধরে থাকলে স্কার্ভি (Scurvy) নামক রোগ হয়। এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে মাড়ি থেকে রক্তপাত, দাঁত ঝরে পড়া, ত্বকের ক্ষত, ক্লান্তি, দুর্বলতা ইত্যাদি।
ভিটামিন সি এর উপকারিতা:
ভিটামিন সি এর অনেকগুলি উপকারিতা আছে, যেমন:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
কোলাজেন তন্তু তৈরি
ক্ষত নিরাময় ত্বরান্বিত করা
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে
রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে
আয়রনের শোষণ বাড়াতে
স্মৃতি শক্তি বজায় রাখতে
ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায়
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাদ্য:
ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় বিভিন্ন ফল ও শাকসবজিতে, যেমন:
লেবু
কমলা
আমলা
পেয়ারা
আনারস
কাঁচা মরিচ
টমেটো
পালংশাক
বাঁধাকপি
দৈনিক ভিটামিন সি এর চাহিদা:
দৈনিক প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি এর পরিমাণ বয়স, লিঙ্গ এবং স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী মায়েরা অধিক ভিটামিন সি গ্রহণ করতে পারেন।
সতর্কতা:
অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণের ফলে পেটে ব্যথা, ডায়ারিয়া, বমি ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। যে কোনও ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।