ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্প বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চলচ্চিত্র শিল্প, যা টিকিট বিক্রি এবং বার্ষিক চলচ্চিত্র মুক্তির সংখ্যার দিক থেকে অতুলনীয়। ২০০৩ সালে ৮৭৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও ১১৭৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছিল। এই শিল্পটি বিভিন্ন ভাষা ও অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করে, যেমন বলিউড (হিন্দি), টলিউড (বাংলা), অসমীয়া চলচ্চিত্র, কর্ণাটকের স্যান্ডেলউড (কন্নড়), কেরলের মালয়ালম চলচ্চিত্র, তামিল চলচ্চিত্র (কলিউড), তেলুগু চলচ্চিত্র এবং মারাঠি চলচ্চিত্র।
বলিউড, মুম্বাই-কেন্দ্রিক হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্প, ১৯১৩ সালে দাদাসাহেব ফালকের 'রাজা হরিশচন্দ্র' ছবির মুক্তির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। ১৯৩১ সালে 'আলম আরা' ছবিটির মুক্তির মাধ্যমে হিন্দি সবাক চলচ্চিত্রের যুগের সূচনা হয়। টলিউড, কলকাতার টালিগঞ্জ-কেন্দ্রিক বাংলা চলচ্চিত্র শিল্প, সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক প্রমুখ কিংবদন্তী পরিচালকদের জন্ম দিয়েছে। অসমের চলচ্চিত্র শিল্প ১৯৩৫ সালে জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালার 'জয়মতী' ছবির মুক্তির মাধ্যমে সূচনা করে। অসমীয়া চলচ্চিত্রে ড. ভবেন্দ্র নাথ শইকীয়া ও জাহ্নু বড়ুয়া প্রমুখ পরিচালকদের অবদান উল্লেখযোগ্য।
কন্নড় চলচ্চিত্র শিল্প (স্যান্ডেলউড) কর্ণাটক রাজ্যে কার্যকরী। কেরলের মালয়ালম চলচ্চিত্র শিল্প তার সামাজিক ও বাস্তববাদী চিত্রায়নের জন্য পরিচিত, ভারতের প্রথম থ্রিডি চলচ্চিত্র 'মাই ডিয়ার কুট্টিচাতান' মালয়ালম ভাষায় নির্মিত হয়েছিল। তামিল চলচ্চিত্র (কলিউড), চেন্নাই-কেন্দ্রিক, ১৯১৬ সালে নির্বাক চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে এবং ১৯৩১ সালে 'কালিদাস' ছবির মাধ্যমে সবাক চলচ্চিত্রের যুগে প্রবেশ করে। তেলুগু চলচ্চিত্র শিল্প বার্ষিক চলচ্চিত্র নির্মাণের সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ। মারাঠি চলচ্চিত্র শিল্প, ১৯৩২ সালে 'অযোধ্যেচা রাজা' ছবির মুক্তির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে, এটি ভারতের প্রাচীন স্থানীয় চলচ্চিত্র শিল্পের মধ্যে অন্যতম।
ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থা, তার উত্থান-পতন, বিভিন্ন অঞ্চলের চলচ্চিত্র শিল্পের বিশেষত্ব এবং বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এই লেখা একটি সম্যক চিত্র প্রদান করে।