ব্রাজিল: দক্ষিণ আমেরিকার বিশালতম ও জনবহুল দেশ
ব্রাজিল, আনুষ্ঠানিক নামে সংযুক্ত প্রজাতন্ত্রী ব্রাজিল, দক্ষিণ আমেরিকার একটি স্বাধীন প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে এটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ। প্রায় ৮৫ লক্ষ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশে প্রায় ২০ কোটি মানুষ বসবাস করে। আমেরিকা মহাদেশের একমাত্র পর্তুগিজ ভাষাভাষী দেশ হিসেবে ব্রাজিলের একটি অনন্য পরিচয় রয়েছে।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
১৫০০ সালে পর্তুগিজ অভিযাত্রী পেদ্রু আলভারেজ কাবরাউ ব্রাজিলে পৌঁছানোর পর থেকে ১৮২২ সাল পর্যন্ত এটি পর্তুগিজ উপনিবেশ ছিল। ১৮০৮ সালে নেপোলিয়নের আক্রমণের ফলে পর্তুগিজ রাজ পরিবার ব্রাজিলের রিও দি জানেইরুতে স্থানান্তরিত হয়, যা পরবর্তীকালে স্বাধীনতার দিকে দেশটিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ১৮২২ সালে ডম পেদ্রু প্রথম ব্রাজিলের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ১৮৮৯ সালে রাজতন্ত্রের পতনের পর ব্রাজিল একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য:
আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলে অবস্থিত ব্রাজিলের উত্তরে ভেনেজুয়েলা, গায়ানা, সুরিনাম, এবং ফরাসি গায়ানা; পশ্চিমে কলম্বিয়া, পেরু, এবং বলিভিয়া; দক্ষিণে আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, এবং উরুগুয়ে অবস্থিত। বিশাল আমাজন অরণ্য, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জীববৈচিত্র্যপূর্ণ অঞ্চল, ব্রাজিলের উল্লেখযোগ্য ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য। দেশটিতে আমাজন নদীসহ বহু বৃহৎ নদী ও প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে।
অর্থনীতি:
ব্রাজিলের অর্থনীতি দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম। কৃষি, খনিজ সম্পদ, শিল্প, এবং সেবাখাত ব্রাজিলের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্রাজিল বিশ্বের অন্যতম উত্থানশীল অর্থনীতি, এবং ব্রিকস দেশগুলির অন্যতম সদস্য।
সংস্কৃতি:
ব্রাজিলের সংস্কৃতি পর্তুগিজ, আফ্রিকান, এবং আদিবাসী আমেরিকান সংস্কৃতির মিশ্রণ। পর্তুগিজ ভাষা দেশের রাষ্ট্রভাষা। ফুটবল ব্রাজিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। ব্রাজিলীয় সঙ্গীত, নৃত্য, এবং স্থাপত্যও বিশ্বে সুপরিচিত।
জনসংখ্যা:
ব্রাজিলের জনসংখ্যা প্রায় ২০ কোটি। ব্রাজিলিয়ান জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই শহরাঞ্চলে বসবাস করে।
উপসংহার:
ভৌগোলিক বিস্তৃতি, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি, এবং দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি ব্রাজিলকে বিশ্বের মঞ্চে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দান করেছে।